‘গুলি ছাড়া বন্দুক দিয়ে সৈন্যদের সীমান্তে যুদ্ধে পাঠিয়ে কি লাভ?’, গার্ডেনরিচ মামলায় প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিনিধি— বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে গার্ডেনরিচকাণ্ড মামলার শুনানি চলে৷ এদিন উচ্চ আদালতে জানায় ‘এই অবৈধ নির্মাণ প্রশাসনের নজর এডি়য়ে হয়েছে বলে মনে হয় না’৷ বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে? তা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে তার রিপোর্ট চেয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ৷ এদিন এই মামলার শুনানি পর্বে প্রধান বিচারপতি জানান “বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর উদ্ধারকার্য বন্ধ করে দিয়েছে৷ ধ্বংসস্তূপে আর কেউ আটকে থাকলে কী হবে?” গার্ডেনরিচকাণ্ডে ১০ জনের মৃতু্য হয়েছে৷ গত বুধবারই এই ইসু্যতে মামলা হয় হাইকোর্টে৷ প্রধান বিচারপতি এদিন নির্দেশ দেন, ‘উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্যকে’৷

এছাড়া তিনি আরও বলেছেন যে, “বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত আইন থাকলেই হবে না, তা বলবৎ করতে হবে৷ গুলি ছাড়া বন্দুক দিয়ে সৈন্যদের সীমান্তে যুদ্ধে পাঠিয়ে কী লাভ?” এছাড়াও তিনি আরও বলেন, “প্রতিটি পঞ্চায়েত সহ সব জায়গায় মনিটরিং সেল থাকা দরকার৷ যেখানে বাডি়টি তৈরি হচ্ছিল, সেখানে জলাভূমি ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে৷” ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ছাড়াও আপাতত কয়েক দিন খাবার সরবরাহ, রেশন সামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে জানিয়েছে হাইকোর্ট৷ যাঁরা বাডি় হারিয়েছেন, তাঁদের জন্য তাঁবুর বন্দোবস্ত করতে বলেছে আদালত৷ আগামী ৪ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে৷ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? সেটাও রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে রাজ্যকে৷

এই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, “যে সমস্ত অফিসারদের বেআইনি নির্মাণ যাতে না হয় তা দেখার দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে, তাদেরকেই নিযুক্ত করা হয়েছে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে!” তিনি আরও বলেন, “দূষণ নিয়ন্ত্রণ পরিষদ কী করবে? এদের অবস্থা অনেকটা সৈনিকদের সামান্য রাইফেল নিয়ে বর্ডারে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার মতো৷ তারা এলাকায় যাবে, তারপর লোকের হাতে মার খাবে৷” প্রধান বিচারপতি জানান, ‘প্রতিটি পঞ্চায়েত, পুরসভার একটা করে মনিটরিং সেল থাকা দরকার৷ প্রশাসনের নজর এডি়য়ে এই ৫ তলা বহুতল গডে় উঠেছে বলে মনে হয় না’৷ এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর প্রশ্ন, ”যে সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে এই মামলায় নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ আনা হচ্ছে তাকে নাকি সরকার তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে৷ সেটা কী ভাবে সম্ভব?” আগামী ৪ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে৷