• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

বন্ধ হিন্দুস্তান কেবল্‌স কারখানায় এবারও হল বিশ্বকর্মা পুজো

স্থানীয় এক কর্মী জানান, ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত এই কারখানার পথ চলা শুরু হয়েছিল । এশিয়া বিখ্যাত ‘জেলি ফিলড কেবল’ তৈরি হত এখানে।

একসময় যেখানে ভারী যন্ত্রাংশের আওয়াজে গমগম ছিল এলাকা। আজ সেখানে নিস্তব্ধতা, চারিপাশে জঙ্গলে ভরা। মনে হচ্ছে যেন বিশ্বকর্মার অভিশাপে সমস্ত কিছুই স্তব্ধ। তবু নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করছে বন্ধ হিন্দুস্তান কেবল কারখানার ৩১ জন বেসরকারি নিরাপত্তা রক্ষী। কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি বিএসএফ, সিআইএসএফ, এসএসবি ফোর্স কারখানা এলাকা পরিদর্শন করেন। তাই আশার আলো দেখছেন সকলে। তাঁরা নিজেরাই টাকা একত্রিত করে বিশ্বকর্মা পুজো করে চলেছেন বেশ কয়েক বছর ধরে। তাঁরা প্রার্থনা করছেন যেন নতুন কোনও শিল্প আসে এই বন্ধ কারখানার জমিতে। তাঁরা মূর্তি এনে পুজো করেন, খিচুড়ি প্রসাদ ও খাওয়ানো হয়।

স্থানীয় এক কর্মী জানান, ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রায়ত্ত এই কারখানার পথ চলা শুরু হয়েছিল । এশিয়া বিখ্যাত ‘জেলি ফিলড কেবল’ তৈরি হত এখানে। এক সময় জমজমাট ছিল কারখানা। ১১০০ শ্রমিক আবাসন, হাসপাতাল, স্কুল, ব্যাঙ্ক নিয়ে সালানপুরের রূপনারায়ণপুরে গড়ে ওঠে এক আধুনিক নগরজীবন। কিন্তু যেন কোনও এক বিশ্বকর্মার অভিশাপে চঞ্চল, কর্মব্যস্ত কারখানার মাথার উপরে কালো মেঘ নেমে আসে।
নয়ের দশক থেকেই পরিকল্পনার অভাবে কারখানা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে শুরু করে। শুরু হয় উৎপাদন হ্রাস ও কর্মী ছাঁটাই। এই ভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে ২০০১ সালে সম্পূর্ণ ভাবে কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কারখানার ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব যায় বিআরপিএসি বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পুনরুজ্জীবন বোর্ডের কাছে। মাঝে একবার নিভে যাওয়ার আগে প্রদীপ জ্বলে উঠেছিল। ২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড উৎসাহ প্রকাশ করেছিল কারখানা অধিগ্রহণের জন্য ।

Advertisement

২০১৬ সালে বাবুল সুপ্রিয় আসানসোলের সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর শেষ চেষ্টা করেছিলেন কারখানার পুনর্জন্ম দিতে। কিন্তু সব চেষ্টা বৃথা যায়। দেড় দশক ধরে উৎপাদনহীন হয়ে পড়ে থাকার পর ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ পাকাপাকি ভাবে বন্ধ হয়ে যায় হিন্দুস্তান কেবলস কারখানা। তারপর থেকেই কারখানার যন্ত্রাংশ একের পর এক নিলামে বিক্রি হয়ে যায়। আবাসনের জানলা-দরজা চুরি হয়ে কঙ্কালসার চেহারা নেয়। কারখানাও কার্যত শ্মশান ভূমিতে পরিণত হয়। এখন কারখানার গেট আর পোড়ো বাড়ির মতো কারখানার কয়েকটি ভবন দাঁড়িয়ে আছে। তবু ৩১জন ঠিকা নিরাপত্তারক্ষী আগলে রেখেছেন কারখানাকে।

Advertisement

Advertisement