• facebook
  • twitter
Sunday, 16 February, 2025

সুপ্রিম কোর্টে আবেদন প্রত্যাহার নির্যাতিতার পরিবারের

পরিবারের আবেদনের বিষয়গুলি বিতর্ক সাপেক্ষ

আরজিকর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। ফাইল চিত্র

আরজি করে ধর্ষণ–খুন কাণ্ডের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা–মা। পাশাপাশি ওই একই আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও মামলা করেছেন তাঁরা। বুধবার শীর্ষ আদালতে এই মামলার শুনানি ছিল। শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না জানান, একই আবেদনের প্রেক্ষিতে দুটি আদালতে শুনানি চলতে পারে না। মামলাটি হয় হাইকোর্ট শুনবে, নয় তো সুপ্রিম কোর্ট। নির্যাতিতার বাবা–মা কোথায় শুনানি চাইছেন তা তাঁদের কাছ থেকে জানতে চান বিচারপতি। এরপরই সুপ্রিম কোর্টের মামলাটি প্রত্যাহার করে নিলেন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা। এদিন সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বধীন বেঞ্চ তাঁদের ফের আবেদন জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, চলতি মাসেই আরজি করে ধর্ষণ–খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি ঘোষণা করেছেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারপতি অনির্বাণ দাস। এই রায় দেওয়ার আগেই সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা–মা। যদিও বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ সেই সময় নির্যাতিতার পরিবারের ওই আবেদন শুনতে চাননি। কারণ তখন সুপ্রিম কোর্টেও আরজি কর মামলা চলছিল। পরে শীর্ষ আদালতেও একই আবেদন করা হয়। সেই মামলারই শুনানি ছিল বুধবার। এদিন নির্যাতিতার পরিবারকে নতুন করে আবেদন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি আরও জানান, আগের আবেদনটি প্রত্যাহার করতে হবে। নির্যাতিতার পরিবারের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কলকাতা হাইকোর্টে একটি আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি নিয়ে আসুন, এখানে মামলা রাখতে চাইছেন না কি কলকাতা হাই কোর্টে!’ এরপরই আবেদন প্রত্যাহার করে নিলেন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা।

এদিন প্রধান বিচারপতি আরও জানিয়েছেন, পরিবারের আবেদনের বিষয়গুলি বিতর্ক সাপেক্ষ। এই নিয়ে দুই তরফের সওয়াল শুনতে হবে। শুনানি করলে যথেষ্ট প্রভাব থাকবে। অপরদিকে কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তথা সিবিআইয়ের আইনজীবী তুষার মেহেতার দাবি, সিবিআই তদন্ত নিয়ে আপত্তি তোলা হলে অভিযুক্ত বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন। নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘আমরা মুখবন্ধ খামে আমাদের বক্তব্য জানিয়েছি। কিন্তু কয়েকটি বিষয়ে আমরা আলোচনা চাই’। এরপরই নতুন করে আবেদন করার পরামর্শ দেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। জানান, নির্যাতিতার পরিবার নতুন করে আবেদন করলে শুনানি হবে।

পাশাপাশি এদিন আরজি করের প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারী চিকিৎসকদের হাসপাতালে উপস্থিতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেন দুই বিচারপতি ৷ নয়াদিল্লির এইমস-সহ দেশের সমস্ত হাসপাতালকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, যে সমস্ত চিকিৎসকরা আরজি করের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করায় হাসপাতালে অনুপস্থিত ছিলেন তাঁদের উপস্থিত বলে ধরতে হবে৷ এ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না জানিয়েছেন, প্রতিবাদকারী চিকিৎসকরা যদি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে কাজে যোগ দিয়ে থাকেন, তাহলে তাঁদের অনুপস্থিতিকে নিয়মিত হিসেবে গ্রাহ্য করতে হবে৷ তবে এই নির্দেশকে আগামী দিনের অন্য কোনও ঘটনার নজির হিসেবে ধরা যাবে না।

সঞ্জয় রায়কে ইতিমধ্যেই আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস। তাই সেই দিকটি মাথায় রেখে আদালতে হলফনামা জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না।