মালদায় বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে দুই মন্ত্রী

রতুয়া দেবীপুরে বন্যা পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল রাজ্যের দুই মন্ত্রীকে।

Written by SNS Malda | October 3, 2019 10:19 am

প্রতিকি ছবি (Photo: IANS)

রতুয়া দেবীপুরে বন্যা পরিদর্শনে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল রাজ্যের দুই মন্ত্রীকে। বুধবার বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনে যান দুই মন্ত্রী জাভেদ খান ও গােলাম রব্বানী। সাথে ছিলেন জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য, পুলিশ সুপার অলােক রাজোরিয়া, জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মন্ডল, রাজ্যে মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন মৌসম নূর প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকরা ও জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

কিন্তু দুই মন্ত্রীর গাড়ির সামনে শতাধিক বানভাসি মানুষ বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। দেবীপুর এলাকার মানুষদের অভিযােগ, এলাকা প্রায় দশ দিন ধরে ফুলহার নদীর জলে ডুবে রয়েছে। অথচ ঠিকভাবে ত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না। পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে। গবাদি পশুর খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে। খাদ্যের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেক ছােট ছােট ছেলেমেয়ে। এসব দাবি নিয়ে দুই মন্ত্রীর সামনে বিক্ষোভে ফেলে পড়ে বানভাসি মানুষেরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়াতে পুলিশ কর্তারা দুই মন্ত্রীকে এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এদিন আর গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে পারেননি দুই মন্ত্রী।

জাভেদ খান বলেন, কারা কি কারণে বিক্ষোভ দেখিয়েছে তা বলতে পারব না। তবে এটা প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্দেশেই মালদায় বন্যাকবলিত বেশ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শনে এসেছি। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলােচনা করা হয়েছে। এর বেশি আর কিছু বলতে পারব না। তার দাবি ফারাক্কা বিবিসি’র মত প্রকল্পগুলি রাজ্যকে না জানিয়ে কখনও জল আটকে রাখে কখনও ছেড়ে দেয়। এর জেরে ফি বছর এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এদিন সকালে দুই মন্ত্রী প্রথমে কালিয়াচকে ব্লকের হামিদপুর এলাকায় যান। তারপরে মানিকচক ব্লকের বেশ কয়েকটি বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এদিন দুপুরে দেবীপুর ফুলহার নদীর বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তাঁরা।

জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মৌসম বেনাজির নুর বলেন, আমি মন্ত্রীদের সাথে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। মানুষ বিভিন্ন অভাব অভিযােগের কথা বলেছি। কিন্তু বিক্ষোভ হয়নি। অভাব অভিযােগের কথা যে কেউ বলতেই পারে। তা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। বিভিন্ন এলাকায় যাওয়া হচ্ছে। বানভাসীদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গবাদি পশু থেকে শুরু করে শিশুখাদ্যের কোনও সমস্যা নেই। সংশ্লিষ্ট এলাকার আইসিডিএস কর্মীরা শিশুদের পুষ্টিকর খাবারে ব্যবস্থা করেছেন।

উল্লেখ্য, রতুয়া থানার দেবীপুর গ্রামপঞ্চায়েতের সূর্যাপুর গ্রামের অস্থায়ী রিংবাঁধ ভেঙে দশ দিন আগেই ফুলহারের জল ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। কুড়িটিরও বেশি গ্রাম। রতুয়া, কালিয়াচক, মানিকচক ব্লক মিলিয়ে এক লক্ষেরও বেশি মানুষ বন্যার কবলে পড়েছে। 

জেলা পরিষদের সভাধিপতি বলেন, এদিন বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি মন্ত্রীরা পরিদর্শন করেছেন। আমিও তাদের সাথে ছিলাম। কোথাও কোনও সমস্যা নেই। নিয়মিত ত্রাণ বিলি হচ্ছে। প্লাবিত এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় মেডিকেল ক্যাম্প রয়েছে, সমস্ত রকম ভাবেই রাজ্য সরকার সহযােগিতা নিয়ে বানভাসীদের পাশে রয়েছে। এদিকে দুই মন্ত্রীর বিক্ষোভের পড়ার ঘটনাকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপি সহ সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, এই বন্যা শাসক দলের গােষ্ঠী কোন্দলের জেরে বাঁধ কাটার ফলে হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই মানুষ ক্ষুব্ধ। ত্রাণ নিয়ে চলছে দলবাজি। আর সেই ক্ষোভ ফেটে পড়েছে দুই মন্ত্রীকে দেখে।