কসবার হোটেল থেকে আদর্শ লোসাল্কার দেহ উদ্ধারের পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই তাঁর দুই সঙ্গীকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। রবিবার দুপুরে তাঁদের পাকড়াও করা হয়। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দ্রুত ঘটনার কিনারা করতে চাইছে পুলিশ।
শনিবার কসবার হোটেলের ঘর থেকে আদর্শের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি বীরভূমের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে কলকাতাতেই থাকতেন। তিনি পেশায় একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। শুক্রবার রাতে আদর্শ নিজের দুই সঙ্গীকে নিয়ে কসবার রাজডাঙা এলাকার ওই হোটেলে ওঠেন। সঙ্গীদের মধ্যে একজন ছিলেন তরুণী। তিনজন মিলে হোটেলের ২টি ঘর ভাড়া নেন।
একটি ঘরে ছিলেন আদর্শ, অন্যটিতে ছিলেন বাকি দুই জন। হোটেলে চেক–ইনের সময় তিনজনেই নিজেদের পরিচয়পত্র দেখান। শুক্রবার গভীর রাতে আদর্শের দুই সঙ্গী হোটেল ছেড়ে বেরিয়ে যান। এরপর শনিবার হোটেলের ঘরের মেঝে থেকে আদর্শের নগ্ন দেহ উদ্ধার করা হয়। জানা গিয়েছে, তাঁর নাকের কাছে রক্ত লেগে ছিল। পাশাপাশি তাঁর পা–ও তোয়ালে দিয়ে বাঁধা ছিল।
আদর্শের দেহ উদ্ধারের পর থেকেই তাঁর দুই সঙ্গীর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেন তদন্তকারীরা। রবিবার তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতদের নাম ধ্রুব মিত্র (২০) ও কমল সাহা (২০)। ধ্রুব নদিয়ার বাসিন্দা। অন্যদিকে কমলের বাড়ি কলকাতায়। কী উদ্দেশ্যে তাঁরা হোটেলে গিয়েছিলেন, আদর্শকে মৃত্যুর ঘটনায় তাঁরা জড়িত কি না তা জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখছেন তদন্তকারীরা।
ইতিমধ্যেই হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছেন পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের দাবি, শুক্রবার গভীর রাতে নিজের ঘর থেকে বেরিয়ে সঙ্গীদের ঘরে ঢুকতে দেখা গিয়েছে আদর্শকে। এরপরই শনিবার সকালে সেই ঘর থেকে আদর্শের দেহ উদ্ধার করা হয়। যদিও ধৃতদের সঙ্গে আদর্শের কী সম্পর্ক ছিল তা জানেন না পরিবারের সদস্যরা।
কী কারণে আদর্শের মৃত্যু হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তদন্তকারীদের অনুমান, তাঁকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু কেন ও কীভাবে তাঁকে খুন করা হল তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে এই নিয়ে শহরে এটা দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে পার্ক স্ট্রিটে এরকম একটা ঘটনা ঘটেছিল। দ্রুত এই ঘটনার কিনারা হবে বলে আশাবাদী তিনি। হোটেল মালিকেরা কীভাবে সতর্ক থাকবেন, তা নিয়ে একটা গাইডলাইন প্রস্তুত করা হচ্ছে বলেও জানান মনোজ।
Advertisement