প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৭৫ বছরে পা দেওয়ার পরেই দেশজুড়ে রাজনীতিবিদদের বয়স নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। এই আবহে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত করার আগে প্রার্থীর বয়স নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কোনও ফাঁকফোকর রাখতে চাইছে না শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই কারণে দলের বিধায়কদের নিয়ে শুরু হয়েছে অভ্যন্তরীন সমীক্ষা। প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে পারফরম্যান্সের পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি দিক খতিয়ে দেখা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিধায়কদের বয়স, তাঁদের শারীরিক অবস্থা, রাজনীতির ময়দানে তাঁরা কতটা সক্রিয় এসব বিষয়ে জানতে অভ্যন্তরীন সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই রাজ্যের সত্তরোর্ধ্ব তৃণমূল বিধায়কদের একটি তালিকা তৈরি হয়েছে। জনসংযোগে তাঁদের সক্রিয়তা ও সুস্থতা প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তরুণ প্রজন্মের কাউকে প্রার্থী করা হলে তাঁরা জনসংযোগের কাজ আরও বেশি ভালো করে করতে পারবে।
বর্তমানে রাজ্যে তৃণমূলের বিধায়কের সংখ্যা ২২০। এছাড়াও বিজেপি ছেড়ে ৬ জন বিধায়ক তৃণমূলে যোগদান করেছে। ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত হিসাব করলে যাঁদের বয়স ৭০ বা তার বেশি হচ্ছে তাঁদের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, সত্তরোর্ধ্ব তৃণমূল বিধায়কের সংখ্যা ৫৭। এর মধ্যে ১৬ জন মন্ত্রী রয়েছেন। সত্তরোর্ধ্ব মহিলা বিধায়কের সংখ্যা ৬ জন। ৭০ বছরের ঊর্ধ্বে চিকিৎসক বিধায়কের সংখ্যা ৪ জন। জেলাভিত্তিক তালিকায় ৭০ বা তার বেশি বয়সের বিধায়কের সংখ্যা সবথেকে বেশি রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। সংখ্যাটা ১১ জন। এরপর উত্তর ২৪ পরগনা (৬ জন), পূর্ব বর্ধমান (৫ জন), নদিয়া (৫ জন) ও পশ্চিম মেদিনীপুরে (৪ জন) সত্তরোর্ধ্ব বিধায়ক রয়েছেন।
উল্লেখ্য, রাজনীতিতে জনসংযোগের কোনও বিকল্প নেই। রাস্তায় নেমে মানুষের পাশে যে নেতা যত বেশি থাকতে পারেন তিনি তত বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এর ফলে নির্বাচনে দল লাভবান হয়। তবে বয়স হলে জনসংযোগের কাজে গতি কিছুটা কমে যায়। শারীরিক সমস্যা এক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। জনসংযোগে তাঁদের সক্রিয়তাও কমে যায়। এর প্রভাব পড়তে পারে নির্বাচনে। সেই কারণে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে সব দিক খতিয়ে দেখে প্রার্থী নির্বাচন করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই বিধায়কদের বয়স ও শারীরিক সুস্থতার বিষয়টিও বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে।