শীতের ছুটিতে টয় ট্রেনে মজেছে পর্যটকরা, পিছিয়ে নেই দার্জিলিঙের জয় রাইডও

বছর শেষের উৎসবে মেতে ওঠেছে রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ। শীতের আমেজ আর উৎসব মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে। ভ্রমণপিপাসু বাঙালি উৎসবের মরসুমে ছুটি কাটাতে ছোটে উত্তরবঙ্গে। ট্রয় ট্রেনের কু-ঝিকঝিক শব্দ, কুয়াশামাথা শীতের সকালে জঙ্গলঘেরা পাহাড়ি পথ আরও মোহময়ী হয়ে ওঠে। তার আকর্ষণে দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা।

আর এই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে টয় ট্রেন। বছর শেষে পাহাড়ি পথে টয় ট্রেনের স্টিম ইঞ্জিন ভাড়া করে সফর করতে চাইছেন পর্যটকরা। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে (ডিএইচআর) আধিকারিকরা জানিয়েছেন, পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সুকনা থেকে রংটং-এর পাহাড়ি পথ। জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে নেই বিশ্ববিখ্যাত দার্জিলিং এবং ঘুম স্টেশনের মধ্যে চলাচল করা ‘জয় রাইড’-ও।

ডিএইচআর সূত্রে খবর, পর্যটকদের বড় দলগুলি গোটা টয় ট্রেন ভাড়া নিচ্ছে। গত মঙ্গলবারও পর্যটকদের একটি দল ডিজেল ইঞ্জিনচালিত একটি আস্ত ট্রেন ভাড়া নিয়ে সফর করেছেন। আগামী ২৯ ডিসেম্বরও একটি পর্যটন সংস্থা সুকনা থেকে রংটং পর্যন্ত স্টিম ইঞ্জিন ভাড়া নিয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের অন্য ছোট রুটের তুলনায় সুকনা-রংটং রুটে চাহিদা সবচাইতে বেশি।


অন্য দিকে, পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে ডিএইচআর দার্জিলিং-ঘুম রুটে বাড়তি তিনটি ‘জয় রাইড’ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডিএইচআর ডিরেক্টর জানিয়েছেন, ‘সুকনা থেকে রংটং রুটে চার্টার্ড ট্রেনের হিড়িক পড়েছে। পাশাপাশি জয় রাইডের চাহিদাও বেড়েছে। আমরা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি এবং প্রয়োজন অনুযায়ী জয় রাইডের সংখ্যা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছি।‘

বড়দিনে স্কুল-কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি থাকে। এই সময় সপরিবারে অনেকেই পাহাড়ে ঘুরতে যান। আর পাহাড়ে এসে টয় ট্রেনে চাপা হবে না, তা ভাবাই যায় না। টয় ট্রেনে চেপে হিমালয়ের অপরূপ শোভা উপভোগ করা যায়। আর এই চাহিদাকেই কাজে লাগাতে চাইছে ডিএইচআর। আয় বাড়াতে ইতিমধ্যেই একাধিক রুটে জয় রাইড পরিষেবা শুরু করেছে ডিএইচআর কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে দার্জিলিং-কার্শিয়াং এবং কার্শিয়াং-তিনধারিয়া রুটে জয় রাইডগুলি জনপ্রিয়তা পর্যটকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

রেলের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২৫ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশ টিকিট অনলাইনে আগাম বুক হয়ে গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এনজেপি থেকে দার্জিলিংগামী নিয়মিত ট্রেনের টিকিটের চাহিদাও আকাশছোঁয়া। এরই মাঝে সুকনা থেকে রংটং বা ঘুম পর্যন্ত গোটা ট্রেন ভাড়া করার প্রবণতা নতুন করে নজর কাড়ছে।

সুকনা-রংটং রুট জনপ্রিয় হয়ে ওঠার নেপথ্যে একাধিক কারণ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই যাত্রাপথে অল্প সময়ে পাহাড় এবং জঙ্গল একসঙ্গে দেখা যায়। শিলিগুড়ির কাছে হওয়ায় সময়ও কম লাগে। সুকনা থেকে রংটং যাওয়ার পথে ঘন জঙ্গল রয়েছে। শীতের আমেজের পাশাপাশি  দেখা মেলে রকমারি পাখি। তাই এই রুটে টয় ট্রেনে চেপে ভ্রমণ  পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করেছে।