তৃণমূলের ৪০ বিধায়ক বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে : মোদি

(Photo: IANS)

সােমবার দুপুরে চণ্ডীতলা থানার অন্তর্গত কৃষ্ণরামপুর মাঠ হুগলি জেলার তিনটি লােকসভা কেন্দ্র শ্রীরামপুর, হুগলি ও আরামবাগের তিন বিজেপি প্রার্থী দেবজিৎ সরকার, লকেট চ্যাটার্জি ও তপন রায়ের সমর্থনে জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি।

এদিন দুপুর ২টা ২০ মিনিট নাগাদ সভার মাঠে বায়ুসেনার চপারে এসে নামেন মােদি। এরপর মঞ্চে উঠে শুদ্ধ বাংলায় সকলকে নমস্কার জানিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কেমন আছেন?’

এদিন প্রথম থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কখনও কটাক্ষ করে তাে কখনও চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলা সহ সারা দেশে চতুর্থ দফার ভােট চলছে। কিন্তু শুধু বাংলাতেই সকাল থেকে হিংসার খবর শােনা যাচ্ছে। আর এতে দিদির রাগ চড়তে চড়তে এখন সপ্তমে চড়ে গেছে।’


তিনি মজা করে বলেন, ‘এখন দিদির দলের নেতারাও তার সঙ্গে কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন। কারণ মােদিকে গালি দিতে দিতে দিদির এখন এমন অবস্থা যে, দলের নেতাদেরও কখন গালি দেবেন সেই ভেবেই কেউ এখন সামনে যাচ্ছেন না।’

তিনি বলেন, বিরােধীরা এখন একজোট হয়েছে। তাদের একটাই বক্তব্য, শুধু মােদিকে গালি দেওয়া। তাদের বক্তব্য থেকে যদি মােদিকে দেওয়া গালি বাদ দিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে আর কোনও বক্তব্য নেই।

তিনি বলেন, যেখানে বিজেপি বা এনডিএ সরকার দেশের জন্য, সেনাদের জন্য কাজ করছে, মুসলিম মা বােনেদের তিন তালাক থেকে বাঁচাতে চাইছে, সেখানে বিরােধীরা শুধুই মােদিকে গালি দিচ্ছে।

মােদি বলেন, ‘দিদি বাংলার মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। ফলে বাংলার মানুষ এখন আর দিদির সঙ্গে নেই।’ তার দাবি, দিদির দলের ৪০ জন বিধায়ক তাঁর সঙ্গে যােগাযােগ রাখছেন ভােট মিটলেই বিজেপিতে নাম লেখানাের জন্য।

তিনি বলেন, দিদির পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যেতে শুরু করেছে। তিনি আরও বলেন, এবারের লােকসভা ভােটে সাধারণ মানুষের মুখে শুধু একটাই কথা, ‘চুপচাপ পদ্মফুলে ছাপ, প্রতিটি বুথ থেকে তৃণমূল ভাগ।’

মুখ্যমন্ত্রী মােদিকে মাটির বসগােল্লা খাওয়ানার প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন বাংলার মাটি শ্যামাপ্রসাদ, রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ, নেতাজির পদধূলিধন্য। সেই মাটির রসগােল্লা অত্যন্ত পুণ্যের। এই মাটির রসগােল্লা প্রসাদের সমান এবং তিনি দিদির এই রসগােল্লা খাওয়ার জন্য অধীর অপেক্ষায় আছেন।

কংগ্রস, সিপিএম, তৃণমূল ও বিজেপির কী তফাত তা বােঝাতে গিয়ে বলেন, দেশের মানুষ চার রকমের রাজনৈতিক দল দেখেছে। কংগ্রেসের উদাহরণ দিয়ে বলেন, একদল হল নামপন্থী। অর্থাৎ নেতাদের যােগ্যতা থাক আর না থাক, নাম ভাঙিয়েই শুধু দল চলে। এরপর সিপিএমের উদাহরণ টেনে বলেন, বামপন্থীরা বিদেশি নীতি নিয়ে দেশ চালাতে চায়। বাংলার মানুষ তাদের ৩৪ বছর দেখেছে। এরপর তৃণমূলের উদাহরণ দিয়ে বলেন, আর একরকম হল দমনপন্থী। অর্থাৎ যারা জোর করে অপরকে ভােট দিতে না দিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়।

তিনি বলেন, এরা গুণ্ডাদের সুরক্ষা দেয়, কিন্তু রাজ্যের মা, বােনেদের সুরক্ষা দেয় না। পাশাপাশি বিজেপির উদাহরণ দিয়ে বলেন, এছাড়া আর একরকম দল আছে যারা বিকাশপন্থী৷ অথাৎ যারা দলের আগে দেশের কথা ভাবে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি যাওয়ার বা প্রধানমন্ত্রী হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দিদি নিজেও ভালাে করে জানেন তিনি দিল্লি যেতে বা প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। তার আসল উদ্দেশ্য ভাতিজাকে (অভিষেককে) বাংলায় শক্ত জায়গা করে দেওয়া। তিনি বলেন, পিসি-ভাইপাের এই খেলা বাংলার মানুষ ধরে ফেলেছে। ২৩ মে’র পর সেটা স্পষ্ট হয়ে যাবে।