ইডির হাতে গ্রেপ্তার মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। সোমবার সকালে আন্দি গ্রামে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। টানা ৬ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিধায়ককে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁকে বড়ঞা থেকে সোজা কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। নিয়োগে অনিয়ম সংক্রান্ত মামলাতেই এবার ইডির স্ক্যানারে এসেছেন এই বিধায়ক। তাঁর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত চলছিল আগেই। সেই মামলায় সিবিআই তাঁকে দেড় বছর আগে গ্রেপ্তার করেছিল। পরে অবশ্য জামিন পেয়ে যান তৃণমূল বিধায়ক। এবার ‘বেআইনি আর্থিক লেনদেন’ ও ‘হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তি’র অভিযোগে নতুন করে চাপে পড়লেন তিনি।
জীবনকৃষ্ণর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে নিজের এলাকার বহু মানুষের চাকরির জন্য সুপারিশ করেছিলেন। মোটা টাকার বিনিময়ে সেসব চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন বড়ঞার বিধায়ক। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে সেই সংক্রান্তে নথিও হাতে পেয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এসএসসি মামলার তদন্তে ইডি সোমবার সকালে জীবনকৃষ্ণর বাড়িতে তল্লাশি চালায়। সূত্রের খবর, ইডিকে দেখে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। নিজের মোবাইল ফোন বাড়ির পিছন দিকের ঝোপে ফেলে দেন। পরে ইডি বুঝতে পারে এবং বাড়ির পিছন দিকের ঝোপে নর্দমা থেকে মোবাইল উদ্ধার হয়। অভিযোগ, এর পরেও দু’টি মোবাইলের পাসওয়ার্ড বলতে চাননি বিধায়ক।
এর আগে ২০২৩ সালে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার ১৩ মাস পর সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পান জীবনকৃষ্ণ সাহা। জেল থেকে বেরিয়ে তিনি বিধানসভাতেও গিয়েছিলেন। আদালত তাঁকে তদন্তে সহযোগিতা করতে বলেছিল। কিন্তু সোমবার আবার তাঁর বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠল। সোমবার সকাল থেকে এসএসসি দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের একাধিক জায়গায় হানা দেয় ইডি। রঘুনাথগঞ্জে জীবনকৃষ্ণর শ্বশুরবাড়িতেও ইডি তল্লাশি চালায়। বীরভূমের সাঁইথিয়ায় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মায়া সাহার বাড়িতে কেন্দ্রীয় সংস্থা হানা দেয়। মায়া সম্পর্কে জীবনকৃষ্ণের পিসি। মহিষ গ্রামের বাসিন্দা ব্যাঙ্ক কর্মচারী রাজেশ ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চলে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত ‘মিডলম্যান’ প্রসন্ন রায়ের শ্বশুরবাড়িতেও হানা দেয় ইডি।