‘বিজেপি নেতাদের বাঁচাতেই অপরাজিতা বিলে বাধা’: তৃণমূল

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

নারী নিগ্রহ ও শ্লীলতাহানি-ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত গেরুয়া শিবিরের একাধিক প্রথম সারির নেতা। তাঁদের বাঁচাতেই বঙ্গ বিধানসভায় পাশ করানো ‘অপরাজিতা বিল’-এ রাষ্ট্রপতির অনুমোদন আটকে দিয়েছে কেন্দ্র! শনিবার গেরুয়া শিবিরের অন্যতম দুই নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও প্রদীপ যোশীর বিরুদ্ধে পুলিশে দায়ের হওয়া অভিযোগের উল্লেখ করে এমনই বিস্ফোরক দাবি করল বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

শুধু তাঁরাই নন, তৃণমূলের মতে, অপরাজিতা বিল আইনে পরিণত হলে কার্তিক মহারাজের মতো একাধিক বিজেপি নেতাকেও ভয়ংকর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। তাঁদের সকলের বিরুদ্ধেই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে দলের মহিলা কর্মীদের দিনের পর দিন ধর্ষণ ও যৌন নিগ্রহের অভিযোগ রয়েছে। স্বভাবতই দলের অভিযুক্ত নেতাদের বাঁচাতে রাষ্ট্রপতিকে সামনে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের আনা কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির প্রস্তাব সম্বলিত বিলটি আটকে দিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার, এমনই সাফ অভিযোগ তৃণমূলের।

প্রসঙ্গত, আরজি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে নারী নির্যাতন বন্ধে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্য বিধানসভায় পাশ হয়েছিল ‘অপরাজিতা’ বিল। এরপর নিয়মমাফিক তা পাঠানো হয়েছিল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে। অন্য সব বিল রাজ্যপালের কাছে গেলে তিনি নিজে সংবিধান অনুযায়ী তাতে সই করেন। কিন্তু এটি স্পর্শকাতর বিষয় সংক্রান্ত বিল হওয়ায় প্রথমে কেন্দ্রের এবং তারপরে রাষ্ট্রপতির কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল।


পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতির দরবার থেকে দাবি করা হল, ওই বিল সংবিধান এবং শীর্ষ আদালতের নির্দিষ্ট কিছু বিধির পরিপন্থী। সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখিয়ে রাষ্ট্রপতির দরবার থেকে সংশ্লিষ্ট বিলটি ফেরত পাঠানো হল কেন্দ্রের কাছে, কেন্দ্রের তরফ থেকে বিলটি ফেরত পাঠানো হল রাজভবনে এবং অবশেষে রাজভবন রাজ্যের কাছে ফেরত পাঠাল বিলটি। আর এতেই প্রশ্ন, নারীসুরক্ষা সংক্রান্ত যে সর্বোচ্চ কঠিন মনোভাব নিয়ে বিল এনেছেন বাংলার নারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরপক্ষ তা শিথিল করতে চাইছে কেন? এই ঘটনার পর প্রতিবাদে মুখর রাজ্যের শাসকদল।

তৃণমূলের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রক ‘অতিরিক্ত কঠোর শাস্তি’ বলে অভিমত জানিয়ে বিলটি আটকে দিয়েছে। এরপর তা বাংলার রাজ্যপালকে ফেরত পাঠাতে রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বস্তুত, শাহের দপ্তরের এই ‘অতি সক্রিয়তা’র নেপথ্যে গত বিধানসভা ভোটের আগে বাংলায় বিজেপির দায়িত্বে থাকা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও প্রদীপ যোশীদের বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা রয়েছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। কৈলাস ও প্রদীপের বিরুদ্ধে দলেরই মহিলারা দিনের পর দিন ধর্ষণ-শ্লীলতাহানির মারাত্মক অভিযোগ করেছেন। তৃণমূলের দাবি, যদি ‘অপরাজিতা’ বিলে রাষ্ট্রপতি সম্মতি দেন এবং তা বাংলায় আইনে পরিণত হয়, তাহলে কৈলাস, কার্তিক, প্রদীপরা বিপদে পড়তে পারেন।