কলকাতা, ২৩ ফেব্রুয়ারি: লোকসভা ভোটের আগে রাজ্যের সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভাগ্যের চাকা ঘুরতে চলেছে। এবার সিভিকে কাজ করা কর্মীদের নিয়োগ করা হবে জুনিয়র কনস্টেবল পদে। ইতিমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য সরকার। তৈরি হচ্ছে নিয়ম কানুন। লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে বলে সূত্রের খবর। ফলে রাজ্যে প্রায় এক লক্ষ ২০ হাজার সিভিক চাকরির নিশ্চয়তা পাবেন।
সাধারণ পুলিশ কর্মীরদেরই জুনিয়র কনস্টবল পদে নিয়োগ করা হয়। পুলিশ হওয়ার জন্য তাঁদের একটি প্রশিক্ষণও থাকে। প্রমাণ উচ্চতাও থাকে। কিন্তু সিভিকদের ক্ষেত্রে সেটা নাও থাকতে পারে। তাঁদের সবার উচ্চতা নির্ধারিত মান অনুযায়ী নেই। তাই তাদের জন্য নিয়মনীতি কতটা শিথিল করা যায় তা নিয়েও চর্চা চলছে।
পুলিশের প্রশিক্ষণও নেই। সেজন্য সিভিকদের কনস্টেবল পদে নিয়োগ করতে হলে আলাদা করে প্রশিক্ষণ নিতে হবে। পাশাপাশি, এদের সকলের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক। যদিও ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের চাপে এখন উচ্চ শিক্ষিতরাও সিভিকে কাজ করছেন।
নবান্ন সূত্রে খবর, কী ভাবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের জুনিয়ার কনস্টেবল পদে নেওয়া হবে, তা নিয়ে নির্দিষ্ট রীতিনীতি তৈরির করার চেষ্টা চলছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে লোকসভা ভোটের নির্ঘন্ট ঘোষণার আগেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগের কারণ প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে রাজ্যের প্রতিটি থানায় পুলিশ কর্মীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম রয়েছে। প্রতিটি থানায় এই মুহূর্তে কনস্টেবল রয়েছে ১৫ থেকে ২০ জন করে। এই স্বল্প সংখ্যক পুলিশ কর্মী দিয়ে লোকসভা নির্বাচনের মতো বৃহৎ কর্মকান্ডে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা কঠিন। সেজন্য বিষয়টি নিয়ে কপালে ভাঁজ ফেলেছে রাজ্য সরকারের। সেজন্য রাজ্য সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। তা ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে সিভিকদের দাবি ছিল চাকরিতে স্থায়ীকরণ। এবার সেই দাবিকে মান্যতা দিতে তাঁদের স্থায়ী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে সিভিকদের দীর্ঘ দিনের দাবি পূরণ হবে। পদোন্নতির আশায় তাঁরা আরও ভালো কাজ করবেন। তেমনি পুলিশ কর্মীর অভাবও কিছুটা পূরণ হবে। তেমনটাই মনে করছে নবান্ন। সিভিকদের জুনিয়র কনস্টেবল পদে নিয়োগ হলে তাঁদের দীর্ঘ দিনের স্থানীকরণের দাবি পূরণ হবে। অস্থায়ী ও অনিশ্চয়তার যে আশঙ্কা, তা দূর হবে। সম্প্রতি সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভাতা এক হাজার টাকা করে বাড়াছে রাজ্য সরকার। যদিও সেটা স্থায়ী কর্মীদের তুলনায় অনেকটাই কম। তাই এই ভাতা বাড়ানোতে মোটেই খুশি নন সিভিক ভলান্টিয়াররা। তবে জুনিয়ার কনস্টেবল পদে চাকরি হলে তাদের দাবি অনেকটা মিটবে বলে মনে করার হচ্ছে।
