বলো বলো দুগ্গা এলো। শুরু হল মায়ের আরাধনা। আজ মহাসপ্তমী। মধ্য গগনে পুজোর আনন্দ। রোজকার একঘেয়ে জীবনযাপন থেকে একটু ছুটি নিয়ে পুজোর আনন্দে মেতে উঠেছে আট থেকে আশি। চলছে দেদার আড্ডা, খাওয়াদাওয়া, প্যান্ডেল হপিং।
শ্রীভূমি, সুরুচি, টালা প্রত্যয়, নাকতলা উদয়ন সংঘের মতো বিগ বাজেটের পুজো ছাড়াও নজর কাড়ছে আবাসনের পুজো। ভিড় টানছে শহরের পাড়ার পুজোগুলিও। আগের মতো একান্নবর্তী পরিবারের সবাই মিলে একসঙ্গে পুজো কাটানোর সৌভাগ্য আর কারও হয় না বললেই চলে। কারণ একান্নবর্তী পরিবারগুলি এখন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে। এই আবহে একান্নবর্তী পরিবারের আমেজই তুলে ধরছে আবাসনের পুজোগুলি। পিছিয়ে থাকছে না পাড়ার পুজোও।
Advertisement
ইস্টার্ন হাই, মার্লিন, বিগ বাজারের উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গায় দুর্গাপুজো আয়োজিত হয়ে থাকে। যেখানে পুজোর পাঁচ দিনই প্রত্যেকটা পরিবার মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। পাঁচ দিন ধরেই চলে খাওয়া-দাওয়া, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রতিযোগিতা। পাশাপাশি পুজোর কাজ তো রয়েইছে। সব দুঃখ-কষ্ট-ভেদাভেদ ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুজোর কাজে হাত লাগিয়ে থাকেন প্রত্যেকেই।
Advertisement
আমহার্স্ট স্ট্রিটের ৩৭ পল্লি সর্বজনীন দুর্গোৎসবের পুজোও সেই ধারাবাহিকতাই বহন করে আসছে। ঘরোয়া পরিবেশেই মা দুর্গার আরাধনা করে থাকেন এই ক্লাবের সদস্যরা। এ বছর এই পুজো ৭৮ বছরে পা দিল। পুজোর যাবতীয় আয়োজনের দেখভাল করছেন ক্লাবের সেক্রেটারি সৌম্য ধর এবং ক্লাবের সহ-সভাপতি সংযুক্তা মুখার্জি। পুজোর ভাবনা নিয়ে সংযুক্তা মুখার্জি বলেন, ‘এ বছর সাবেকিয়ানাকেই প্রাধান্য দিয়েছে ৩৭ পল্লি সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি’।
বিগ বাজেটের পুজো ছেড়ে যদি একটু শহরের আনাচে কানাচে চোখ রাখা যায়, তাহলেই এমন অনেক পুজোর সন্ধান মিলবে যা নজর কাড়তে পারে দর্শনার্থীদের।
পুজোর দিনগুলিতে শহরের চালচিত্রই যেন বদলে যায়। চেনা ব্যস্ত শহরও তখন সেজে ওঠে আগমনীর সাজে। এই উৎসবে কোনও ভেদাভেদ থাকে না। পাড়ায় পাড়ায় চলে পুজোর তোড়জোড়। প্যান্ডেল, মণ্ডপ, ঠাকুরদালান সেজে ওঠে রঙবেরঙের আলো, ফুলে। বড় বাজেটের থিম পুজোকে সরিয়ে রেখে পাড়ার পুজোগুলিতেও শিল্পীদের ভাবনা ও সৃষ্টি দেখলে অবাক হতে হয়। সেই সব শিল্প, সংস্কৃতি, পাড়ার মানুষদের যৌথ উদ্যোগকে কুর্নিশ।
Advertisement



