• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

‘দৈনিক স্টেটসম্যান’-এর একনিষ্ঠ পাঠক থেকে তার দায়িত্বশীল সাংবাদিক হয়ে ওঠার কাহিনী

মাঝে মধ্যে আপৎকালীন অবস্থায় আমাকে তাঁর মুখে বলা সংবাদ কম্পিউটারে কম্পোজ করে স্টেটসম্যান অফিসে পাঠাতে সাহায্য করতে হতো।

কলকাতা শহরের প্রাণকেন্দ্রে 'দ্য স্টেটসম্যান' হাউস। ফাইল চিত্র

সুভাষ পাল

২০০৪ সালের প্রথম দিকের কথা। বছর তিনেক হল জেলার এক শীর্ষ পাক্ষিক সংবাদপত্রে সাংবাদিকতার কাজ করছি। নাওয়া-খাওয়া ভুলে সেই কাগজের সংবাদপত্র কভার করতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ছুটে বেড়াতাম। দিনের শেষে আমরা সমস্ত সহকর্মীরা ওই সংবাদপত্রের সম্পাদক তথা বর্ষীয়ান সাংবাদিকের সঙ্গে বারাসতের অফিসে আড্ডায় বসতাম। তিনি গল্পের ছলে আমাদের সংবাদপত্র কভার করা এবং সংবাদ লেখার পদ্ধতি নিয়ে পাঠ দিতেন। আলোচনায় উঠে আসতো রাজ্য ও জেলার রাজনীতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের গতিবিধির প্রসঙ্গও। এরকমই একটি নির্ভেজাল দিনে আমাদের আলোচনার টেবিলে উঠে এলো, ‘দ্য স্টেটসম্যান’ গ্রুপ খুব শীঘ্রই ‘দৈনিক স্টেটসম্যান’ নামে একটি বাংলা সংবাদপত্র প্রকাশ করতে চলেছে।

Advertisement

আরও জানতে পারলাম, আমাদের জেলারই একজন সাংবাদিক তথা একটি পাক্ষিক কাগজের সম্পাদক অভ্রনীল মুখোপাধ্যায় এই সংবাদপত্রের জেলার প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। পরবর্তীতে বারাসতের নবপল্লীতে ওই সাংবাদিকের বাড়ি লাগোয়া অফিসে আমি আংশিক সময়ের কর্মীও নিযুক্ত ছিলাম। সেজন্য মাঝে মধ্যে আপৎকালীন অবস্থায় আমাকে তাঁর মুখে বলা সংবাদ কম্পিউটারে কম্পোজ করে স্টেটসম্যান অফিসে পাঠাতে সাহায্য করতে হতো।

Advertisement

ওই বাড়ির বারান্দায় বিভিন্ন দৈনিক সংবাদ মাধ্যমের জেলার সংবাদ প্রতিনিধিরা নিয়মিত আড্ডা দিতেন। সেখানে নিয়মিত ‘দৈনিক স্টেটসম্যান’ সংবাদপত্রটি রাখা হতো। আমি অন্যান্য কাগজের পাশাপাশি এই কাগজটি নিয়মিত পড়তাম। এছাড়া একটি রাজনৈতিক দলের জেলা অফিসেও কাগজটি পড়ার সুযোগ পেতাম। এই সংবাদপত্র তখন রাজ্যের অন্যান্য সংবাদপত্রের তুলনায় নিতান্তই নবীন। তা সত্ত্বেও এই কাগজের সংবাদ পরিবেশনের ধরন আমাকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করেছিল। কারণ কাগজটির খবরের মান সেই সময় থেকেই রাজ্যের প্রথম শ্রেণীর সংবাদপত্রগুলির সঙ্গে সমান্তরালভাবে পাল্লা দিচ্ছে।

একজন নবীন সাংবাদিক হিসেবে এই কাগজে কাজ করার জন্য সে সময় চেষ্টাও করেছিলাম। কিন্তু সেই উদ্যোগ সফল হয়নি। পরবর্তী সময়ে আমি রাজ্যের অন্য একটি দৈনিক সংবাদপত্রে কাজ শুরু করলেও এই কাগজটির প্রতি আমার আকর্ষণ বিন্দুমাত্র কমেনি। সেজন্য প্রথম শ্রেণীর ওই সংবাদপত্রে কাজ করার সময় ২০১৩ সাল নাগাদ এই কাগজের এক প্রাক্তন সম্পাদকের সঙ্গে আমি ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেছিলাম, এর ডিজিটাল সংস্করণ চালু করার জন্য। ঘটনাক্রমে কাগজটির জন্মের প্রায় দুই দশক পর আমি এই কাগজে সাংবাদিকতার সুযোগ পেয়ে সত্যিই গর্বিত। কারণ একজন সাংবাদিক হিসাবে এখানে স্বাধীনভাবে কাজ করার অনেক সুযোগ আছে। আশা করব, ‘দৈনিক স্টেটসম্যান’ তার বলিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে আগামী দিনে রাজ্যের অন্যান্য সংবাদপত্রকে অনেক পিছনে ফেলে দেবে।

Advertisement