“বুঝে গেছে জনতা, ভয় পেয়েছে মমতা ” একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ সুকান্তর

আজকে হাওড়ার ঘুশুড়ি এলাকায় বিষ মদ খেয়ে মৃত পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

পাশাপাশি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অসুস্থ রোগীদের সঙ্গেও দেখা করেন। চিকিৎসা সংক্রান্ত খুঁটিনাটি জিজ্ঞাসা করেন তিনি।

এরপরে হাওড়া সদরের জেলা অফিসে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন।


তিনি বলেন আজকের একুশে জুলাইয়ের সভার একটাই স্লোগান ছিল “বুঝে গেছে জনতা, ভয় পেয়েছে মমতা “। ইডি সিবিআইকে ভয় পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বলেই দাবি করেন সুকান্ত।

তিনি আরও বলেন এই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে তার দলের লোকেরা ঠেলে দিল্লিতে পাঠাতে চাইছেন। তিনি সেই প্রসঙ্গকে কটাক্ষ করে বলেন ওনার রাজ্য সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।

ইতিমধ্যে হরিশ মুখার্জীর সঙ্গে কালীঘাটের সংঘাত লেগে গেছে। তিনি আরও জানান মুখ্যমন্ত্রী পাঁচ কোটি শিল্প তালুকের মিথ্যে গল্প শোনাচ্ছেন। গোটা ভারত বর্ষের কোনো রাজ্যে পাঁচ শো শিল্পতালুক নেই।

তিনি সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন অনেকদিন ধরেই রাজ্যে বিনিয়োগের গল্প শোনাচ্ছেন তবে একটা ভিডিও তিনি দেখতে চান যেখানে বিনিয়োগ এসেছে।

পাশাপাশি তিনি বলেন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে দেওয়া অর্থের হিসাব রাজ্য সরকার ব্যর্থ তাই হিসাব না দিলে কেন্দ্রীয় সরকার ওই খাতে অর্থ দেবে না বলেই দাবি করেন তিনি।

সুকান্ত বলেন রাজ্য সরকারের ভাড়ারে মা ভবানী। উনি শিক্ষকদের মহার্ঘ ভাতা দিতে পারছেন না।

আর কিছুদিন পরে মাইনের টাকা দেওয়ার মতো অর্থও থাকবে না বলে দাবি করেন সুকান্ত। তিনি অভিযোগ করে বলেন দেউচা পাচামিতে আদিবাসীদের চলে বলে কৌশলে রাজি করানোর চেষ্টা করছেন তিনি।

আসলে ওখান থেকে পাথর তুলে আনাই তার উদ্দেশ্য। এছাড়াও রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে একহাত নেন তিনি।

তিনি বলেন মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক শিষ্টাচার ভুলে গেছেন। তার মতো বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদের থেকে দেশের রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতিকে নিয়ে মন্তব্য দুর্ভাগ্যজনক।

পাশাপাশি আজকে ফের তিনি বামেদের সঙ্গে ফিশফ্রাই জোট বলে মনে করিয়ে দেন বামেদের আমলের চাকরির দুর্নীতির কথা এগারো বছর পর তিনি বলছেন।

তাহলে বামেদের সঙ্গে তার ফিশফ্রাই জোট চলছিল। তাই মুখ্যমন্ত্রী হয়ে দুর্নীতির তদন্ত করান নি।

রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থা রাজ্য সরকার তুলে দিয়েছেন আর চাকরি প্রার্থীদের চাকরি দিতে যে দুর্নীতি তিনি করেছেন এটা আদালত বলছে। তিনি আরও বলেন মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যাচার করতে ভালোবাসেন তার উদাহরণ বহুবার সামনে এসেছে।

সুকান্ত দাবি করেন অর্থনীতিবিদদের সতর্ক করার পরেও কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রো পণ্যের দাম দু বার কমিয়েছেন।

আর মুখ্যমন্ত্রী নিজের দায়িত্ব পালন না করে সেই দায় কেন্দ্রীয় সরকারের ঘাড়ে দিতে চেয়েছেন। এছাড়াও

কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া অর্থে বাংলার প্রকল্প বলে চালানো যাবে না বলেই দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন এবার তাঁরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষদের পঞ্চায়েত সদস্যদের বাড়ির ছবি দেখিয়ে বলবেন কেন্দ্রের দেওয়া টাকা কোথায় গেছে। এবার সেখান থেকে তাঁরা বুঝে নিক তাঁদের প্রাপ্য।

পাশাপাশি হাওড়ার বিষ মদ কাণ্ডকে তিনি সরাসরি রাজ্য সরকারের পরিকল্পিত চক্রান্ত বলেই দাবি করেন। তিনি জানান বাংলায় ২৭ ত্বককে মদের পাউচ বিক্রি করার এটা পরিনাম।

বিষ মদ কাণ্ডের প্রধান মাথা প্রতাপ কর্মকারকে গোলাবাড়ি থানা গ্রেফতার করে। আজ তাঁকে আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁকে ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।

তার বিরুদ্ধে আইপিসি আইনে ২৭১,২৭৩, ৩০৪,১২০বি,৪৬এএ ধারাতে মামলা রুজু করেছে মালি পাঁচ ঘড়া থানা।

হাওড়ার বিষ মদ কাণ্ডে ১০ জন মারা যায় ও একাধিক ব্যক্তি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।