করোনা কাটা তো রয়েইছে তার পাশাপাশি শেষ বর্ষায় একের পর এক নিম্নচাপের প্রভাবে প্রায় ঘরবন্দি হওয়ার দশা দক্ষিণবঙ্গবাসীর। গত দুই সপ্তাহ ধরে নিম্নচাপের জেরে বর্ষণসিক্ত শহর থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা। হঠাৎ মেঘ আবার পলক ফেলতে না ফেলতেই মেঘের ঘনঘটা। মেঘ রোদ্দুরের খেলার মধ্যেই ঝমঝমিয়ে নেমে পড়ছে বৃষ্টি।
গত এক মাসে বঙ্গোপসাগরে একের পর এক নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। আর তার ফলেই অতি বৃষ্টি। জোড়া নিম্নচাপের ফলা কাটতে না কাটতেই ফের একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। আবাহাওয়া দফতরের তরফ থেকে জারি করা হয়েছে কমলা সতর্কতা। বন্যাপ্রবণ এলাকার মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার ব্যবস্থা করছে প্রশাসন।
Advertisement
সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার ক্ষেত্রে মৎসজীবীদের সর্তক করেছে আবহাওয়া দফতর। এর পাশাপাশি নদী ও সমুদ্র তীরবর্তি স্থানে জলস্তর বাড়বে বলেও জানিয়েছেন হাওয়া অফিসের কর্তারা। দফায় দফায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হবে খাস কলকাতা সহ দুই ২৪ পরগনা, মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, বর্ধমান সহ বিভিন্ন জেলাগুলিতে। অতিরিক্ত ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
Advertisement
সপ্তাহের শুরুতেই সোমবার সকালের দিকে রোদ্দুর থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘন ঘোর মেঘে ঢেকে যায় অকাশ। বজ্রগর্ভ মেঘে দুপুরেই অঝোরে বৃষ্টি নামে। বৃষ্টির জেরে ব্যাপক সমস্যায় পড়ে সাধারণ মানুষ। এই বৃষ্টি আরও বেশ কয়েকদিন চলবে বলে জানিয়েছে আহাওয়া দফতর।
খাস কলকাতা শহরের একাধিক অংশ জলমগ্ন। দক্ষিণের বেহালা, তারাতলা, বন্দর এলাকা থেকে শুরু করে উত্তরের বরানগর, ঠনঠনিয়া, কলেজস্ট্রিট চত্বর এবং মধ্য কলকাতার একাধিক অংশে জল জমে গিয়েছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বিভিন্ন অংশে জমা জলের প্রভাবে করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গুর সম্ভান্না নিয়েও অশঙ্কিত শহর ও জেলাবাসী।
এর পাশাপাশি পর পর নিম্নচাপ এবং অতি বর্ষণের প্রভাবে জমা জলে যানজটও বেড়েই বহুগুন। বেহাল রাস্তা ও যান যন্ত্রণায় পথে বেড়িয়ে নাজেহাল দশা মানুষের। দীর্ঘক্ষণ যানজটে ফেসে চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। আবহাওয়ার এই অকস্মিক দুর্যোগের মধ্যেও সঙ্কটকালীন পরিস্থিতিতে চাকরি বাঁচাতে শুধুমাত্র সাইকেল নিয়ে দীর্ঘ পথ পারি দিয়ে অফিস পৌছছে বহু মানুষ।
অন্যান্য বছরে এই সময়েই পুজোর তোড়জোড় শুরু হয়ে যায় পুরোদমে। এবার পুজো পিছিয়েছে প্রায় এক মাস। তার দোসর হয়েছে অজানা রোগের আকস্মিক বিপর্যয় করোনা কালীন পরিস্থিতিতে এখনও বাঙালীর সব থেকে বড় পুজো নিয়ে আশঙ্কিত শহরের বড় ছোট প্রায় সমস্ত পুজো উদ্যোক্তারা। শেষ বর্ষায় পুজো প্রস্তুতি থেকে কেনাকাটায় চরম অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় মানুষকে। তবে এবার এখনও পুজো প্রস্তুতি শুরু না হওয়ায় অতি বৃষ্টি সেভাবে প্রভাব ফেলবে না বলেই জানালেন শহরের কিছু পুজো উদ্যোক্তা।
Advertisement



