আজ সন্ধ্যা ৭.৩০ নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। মৃত্যুকালে কিংবদন্তি সঙ্গীতশিল্পীর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
গত ২৬শে জানুয়ারি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। যদিও ২৭শে জানুয়ারি অবস্থার আরো অবনতি ঘটায় তাকে গ্রিন করিডোর করে লেক গার্ডেন্স থেকে এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
Advertisement
পরবর্তী সময়ে তাঁর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসায় তাকে স্থানান্তর করা হয় অ্যাপোলো হাসপাতালে। গীতশ্রীকে দেখতে স্বয়ং হাসপাতালে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Advertisement
আজ হটাৎ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের জেরে রীতিমত সঙ্কটজনক অবস্থায় তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সমগ্র শিল্পীমহলে।
১৯৪৮ সালে বিমল রায় পরিচালিত হিন্দি সিনেমা আনজানগড়ের মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র জগতে গায়িকা হিসেবে পদার্পণ করেন।
এরপর বিগত এত বছর ধরে তিনি হিন্দি বাংলা তথা বিভিন্ন ভাষায় অগণিত জনপ্রিয় গান গেয়েছেন। তার গাওয়া গানে যুগের পর যুগ মন্ত্রমুগ্ধ হয়েছে দেশ-বিদেশের সহ সমগ্র পৃথিবীর সঙ্গীতপ্রেমীরা।
একাধিক পুরস্কারে তিনি পুরস্কৃতও হয়েছেন। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে ১৯৭০ সালে শ্রেষ্ট প্লেব্যাক সিঙ্গার হিসেবে জাতীয় পুরস্কার দেওয়া। ২০১১ সালে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ‘বঙ্গবিভূষণে’ সম্মানে ভূষিত করা হয়।
২০১২ সালে ‘সঙ্গীত মহাসম্মান’ ও ২০১৫ সালে ‘ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলি বিশেষ সঙ্গীতসম্মান’ প্রদান করা হয় গীতশ্রীকে।
এছাড়া তিনি ভারত নির্মাণ অ্যাওয়ার্ড, ন্যাশনাল ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড, বিএফজেএ অ্যাওয়ার্ড সহ বহু সম্মানে সম্মানিন হন।
আমৃত্যু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সঙ্গীত একাদেমীর সভাপতিও ছিলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।
কয়েকদিন আগে ভারত সরকার তাকে ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কারে পুরস্কৃত করতে চেয়ে ছিলেন যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন এবং বিশিষ্ট শিল্পীমহল থেকে সাধারণ মানুষের সমালোচনার মুখে পরতে হয় মোদি সরকারকে।
কারণ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মতন এক প্রবাদপ্রতিম শিল্পীর যার সংগীত জগতে অবদান এবং যোগ্যতার সামনে ‘পদ্মশ্রী’ পুরস্কার যথাযথ সম্মান নয় ।
তাঁর অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ দেশ-বিদেশের বহু জনপ্রিয় শিল্পী কুল সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেন টুইটারে। তিনি জানান, “গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় আর নেই। তাঁর মৃত্যুতে আমি গভীর শোকাহত। তাঁর মৃত্যুকে সঙ্গীত জগতে ও লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয়ে এক বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি তৈরি হল।
ওঁকে আমি বরাবরই নিজের দিদির মতো নজর রাখতাম। তাই তাঁর মৃত্যু আমার কাছে এক ব্যক্তিগত ক্ষতি। আমাদের সঙ্গীত অ্যাকাডেমির প্রাণ ছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। তাঁকে আমরা ‘বঙ্গবিভূষণ’, আর ‘সঙ্গীত মহাসম্মান’ খেতাবে সম্মানিত করেছিলাম
Advertisement



