সন্দেশখালি কাণ্ডে সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ

কলকাতা, ৭ ফেব্রুয়ারি: রেশন দুর্নীতির তদন্তে গিয়ে ইডি আধিকারিকরা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার তদন্তে নতুন মোড়। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ। আজ, বুধবার প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, এই ব্যাপারে এখন কোনও হস্তক্ষেপ করা যাবে না। আগামী ৬ মার্চ পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ দিল আদালত।

প্রসঙ্গত সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলার ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের আবেদন খারিজ করে দিয়ে সিবিআই ও রাজ্য পুলিশের যৌথ তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর পর্যবেক্ষণ ছিল, রাজ্য পুলিশ পক্ষপাতমূলক আচরণ করতে পারে, এই আশঙ্কা অমূলক। রাজ্য পুলিশ থাকলে ওই এলাকায় গিয়ে তদন্ত করতে সুবিধা হবে। সেজন্য যৌথভাবে সিট গঠন করে তদন্তের নির্দেশ বিচারপতি সেনগুপ্ত।

ইডি সিঙ্গল বেঞ্চের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যায়। আজ, বুধবার ছিল সেই মামলার শুনানি। সিঙ্গল বেঞ্চের সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী ৬ মার্চ অবধি এই স্থগিতাদেশ জারি থাকবে। সেদিন এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত। এই ঘটনা নিয়ে অন্যান্য যে এফআইআরগুলি হয়েছে, তার তদন্তও করতে পারবে না রাজ্য পুলিশ।


এ দিন শুনানিতে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল বলেন, ‘‘সন্দেশখালির ঘটনায় সিবিআই ও রাজ্য পুলিশের যৌথ তদন্ত হলে রাজ্য পুলিশ তদন্তের অভিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে । কারণ, রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী ও প্রভাবশালী নেতা রেশন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। সেজন্য সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করা উচিত।’’

সন্দেশখালিতে শাহজাহান শেখের বাড়িতে যাওয়ার পথে ইডি আধিকারিকরা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় সিঙ্গল বেঞ্চ গত ১৭ জানুয়ারি সিবিআই ও রাজ্য পুলিশকে নিয়ে সিট গঠন করে যৌথভাবে তদন্তের নির্দেশ দেন। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় ইডি। তাদের বক্তব্য ছিল, রাজ্য পুলিশ এর আগে একাধিক মামলায় সিবিআইয়ের সাথে অসহযোগিতা করেছে। এক্ষেত্রেও সেই আশঙ্কা রয়েছে৷ তাই তদন্তভার শুধুমাত্র সিবিআইয়ের হাতে দেওয়া হোক।

অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল আরও বলেন, ‘‘রাজ্য পুলিশ শাহজাহান শেখকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। সেটা আমরা সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতিকে জানিয়েছি। ঘটনায় ইডির আধিকারিকরা আক্রান্ত হয়েছিলেন। রাজ্য পুলিশকে জানানো সত্ত্বেও শাহজাহান শেখের বাড়িতে যাওয়ার পথে তারা সহযোগিতা করেনি। তা সত্ত্বেও বিচারপতি সেনগুপ্ত দু’পক্ষকে নিয়ে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন।’’

কিন্তু সেই মামলা বেশ কয়েকদিন ধরে তালিকায় থাকলেও শুনানি হচ্ছে না। ইডির তরফে আইনজীবী মঙ্গলবার ফের প্রধান বিচারপতিকে জানান ১২ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চে প্রাথমিক রিপোর্ট দেওয়ার কথা। কিন্তু তদন্ত থমকে রয়েছে। দ্রুত এই মামলার শুনানি হোক। প্রধান বিচারপতি আশ্বাস দিয়েছিলেন মামলাটি আজ শুনবেন। সেই মতো শুনানি হয়৷ এরপর সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ ৷