বুথ লেভেল আধিকারিক তথা বিএলও–দের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সোমবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল সিইও দপ্তর। পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন তথা এসআইআর পর্বে বিএলও–দের উপরে অতিরিক্ত কাজের চাপ দেওয়া হচ্ছে।
এর বিরোধিতা করে এদিন তালা হাতে সিইও দপ্তরে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন বিএলও অধিকার রক্ষা সমিতি নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা। নির্বাচন কমিশনের গেটের সামনে আন্দোলনকারীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। এরপরই শুরু হয় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি। এর জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
এদিন সিইও দপ্তরে হাজির হয়ে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়ালের সঙ্গে দেখা করতে চান বিএলও–রা। কিন্তু তাঁদের কাছে কোনও অ্যাপয়েন্টমেন্ট না থাকায় দেখা করতে রাজি হননি মনোজ। তাঁর পরিবর্তে অতিরিক্ত সিইও বিএলও–দের সঙ্গে দেখা করেন।
কিন্তু মনোজের সঙ্গে দেখা না হওয়ায় সিইও–র ঘরের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল)। বিক্ষোভ তুলতে রাজি ছিলেন না আন্দোলনকারীরা। এর ফলে তাঁদের টেনে–হিঁচড়ে সরিয়ে দেন পুলিশ কর্মীরা। আন্দোলনকারীরা নির্বাচন কমিশনের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে পুলিশ এই কাজে বাধা দেয়।
এরপর অফিসের সামনেই ধরনায় বসে পড়েন বিএলও–দের একাংশ। যদিও অভিযোগ, এই আন্দোলনে বিএলও নন এমন অনেকেও শামিল হয়েছিলেন। অনেক দিন ধরেই রাজ্যের বিএলও–রা অভিযোগ করছিলেন, এসআইআর পর্বে তাঁদের উপর অতিরিক্ত কাজের চাপ দেওয়া হচ্ছে। এর জেরে আত্মহত্যা ও অসুস্থ হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। বিএলও–র কাজ সম্পর্কে তাঁদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়নি। এবিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লিখে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্প্রতি কমিশনের ওয়েবসাইটে তথ্য আপলোড করার কাজও বিএলও–দের উপরে এসে পড়ে। এই কারণে বিক্ষোভে শামিল হন তাঁরা। যদিও কমিশনের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ সহ ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে ৫ লক্ষ ৩২ হাজারের বেশি বিএলও কাজ করছেন। পশ্চিমবঙ্গে মোট ৮০,৬৮১ জন বিএলও নিয়োগ করা হয়েছে। রাজ্যের এই বিএলও–দের উপরে বাড়তি চাপ নেই। গড়ে প্রত্যেক বিএলও–কে ৯০০–১০০০ জন ভোটারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর জন্য ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় রয়েছে।
Advertisement