কলেজ স্কোয়ারের সুইমিং পুলে ডুবে মৃত্যু তরুণের

এক তরুণের মৃত্যুকে কেন্দ্রে করে ফের কলেজ স্কোয়ারের সুইমিং পুলের পরিকাঠামাে নিয়ে প্রশ্ন উঠল।

Written by SNS Kolkata | August 5, 2019 3:20 pm

প্রতীকী ছবি (Photo: Wikimedia Commons)

সাঁতার শিখতে গিয়ে ফের ডুবে মৃত্যু কলেজ স্কোয়ারের পুলে। এক তরুণের মৃত্যুকে কেন্দ্রে করে ফের কলেজ স্কোয়ারের সুইমিং পুলের পরিকাঠামাে নিয়ে প্রশ্ন উঠল। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সুইমিং ক্লাবের প্রশিক্ষকের কোনও গাফিলতি ছিল কিনা সে বিষয়েও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।

পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটেছে সকাল সাড়ে ৬ টা নাগাদ। ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট সুইমিং সেকশনে সাঁতার শিখতাে মহম্মদ শাহবাজ। অন্য দিনের মতাে রবিবার বছর ১৭’র শহাবাজ সাঁতার শিখতে আসে। কিন্তু পুলের গভীর জলে সে তলিয়ে যায়।

দীর্ঘক্ষণ শাহবাজকে খুঁজে না পেয়েই তার সন্ধান শুরু হয়। সকাল সাড়ে ৮ টা নাগাদ কলকাতা পুলিশের ১০০ ডায়ালে ফোন করে ঘটনাটি জানায়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ এবং কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মােকাবিলা বাহিনীর ডুবুরিরা। গভীর জল থেকে ডাঃ সুধীর বােস রােডের বাসিন্দা মহম্মদ শাহবাজের অচৈতন্য দেহ উদ্ধার করা হয়।

দ্রুত তাকে পাঠানাে হয় কলকাতা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা শাহবাজকে মৃত বলে ঘােষণা করেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় এলাকায়। কলকাতা পুলিশের এইচআরএফএস’র টিম পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়।

এদিকে এই ঘটনার পরেই কলেজ স্কোয়ারে সাঁতার শেখার পরিকাঠামাে নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট সুইমিং সেকশনের ছাত্র ছিল সে। জানা গেছে, সম্প্রতি শিক্ষানবীশ হিসেবে সাঁতারে ভর্তি হয় মহম্মদ শাহবাজ। কিন্তু সে গভীর জলে সাঁতার কাটার ছাড়পত্র তাকে কে দিল? প্রশিক্ষণ ছাড়াই সে কিভাবে গভীর জলে সাঁতারে নামলাে তাই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। সেই সময় প্রশিক্ষকরাই বা কোথায় ছিলেন? সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

জানা গেছে, কলেজ স্কোয়ারে দুটি পুল পাশাপাশি রয়েছে। একটিতে কম জল ও অন্যটি গভীর জলের। সাধারণত প্রশিক্ষিত সাঁতারুরা ছাড়া গভীর জলে অন্যদের নামতে দেওয়া হয়না। সেক্ষত্রে কিভাবে ওই তরুণ প্রশিক্ষকের নজরদারি এড়িয়ে গভীর জলের পুলে নামলাে তা খাতিয়ে দেখছে তদন্তকারী আধিকারিকরা। খতিয়ে দেখা হচ্ছে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভূমিকাও।

লাইফগার্ড, লাইফ সেভিয়র সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিতে রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু এদিন সাঁতার শিখতে আসা নতুনদের জন্য এমন কেউ ছিলেন কিনা সেই সময় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। প্রসঙ্গত, বছর দুয়েক আগে কলেজ স্কোয়ারে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক সাঁতারুর। বছর ৬৭-এর ওই প্রৌঢ়ের দেহ পুলের কাঠের ক্ৰেকের নীচে আটকে ছিল। প্রক্তন ন্যাশনাল লেভেলের সাঁতারু ছিলেন কাজল দত্ত। ২০ ঘণ্টা পর তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।

এছাড়া শহরের অপর একটি সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হের্দুয়াতেও প্রায় এমন একটি ঘটনার স্বাক্ষী থেকেছে শহরবাসী। বছর ২২-এর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়ার ডুবে মৃত্যু হয়। হেদুয়ার আজাদ হিন্দ বাগ মহিলা সমিতিতে সাঁতার প্রশিক্ষণ নিতে যেত সে। অন্যদিনের মতাে ২০১৬ সালের ১ জুন পিসির সাথেই সাঁতার শিখতে গিয়েছিল সঙ্গীতা দাস। কিন্তু আর ফেরেনি। জলে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল তার। সেই সময় তিনজনের একজন প্রশিক্ষকও উপস্থিত ছিলেন না। সাত ফুট গভীর জলে তলিয়ে গিয়ে শিক্ষানবীশ সঙ্গীতার মৃত্যু হয়।