দাগি অযোগ্যদের তালিকা ঘিরে ফের সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে এসএসসি। স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রকাশিত অযোগ্যদের তালিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। ফের একবার পুরো বিবরণ সহ দাগি অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। বুধবার বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি এনভি অঞ্জরিয়ার বেঞ্চে মামলাটি উঠলে, সেখানেই এসএসসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এদিন এসএসসির পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই পরীক্ষার ফলপ্রকাশ হবে। আদালত থেকে সেই অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু এর পাশাপাশি অযোগ্যদের তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় ডিভিশন বেঞ্চে। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে এই দাগি অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে রাজিও হয়েছে এসএসসি।
দুর্নীতি থাকার কারণে ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের গোটা প্যানেলটি বাতিল করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত। চাকরি হারায় প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী। এরপরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করে এসএসসি। পরীক্ষার জন্য আবেদন প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে হয়ে যায় জুলাই মাস থেকে। এরপরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল পরীক্ষায় আবেদন প্রক্রিয়ায় যাতে কোনও দাগি অযোগ্য প্রার্থীরা অংশগ্রহণ না করতে পারে। তার জন্য আদালতের তরফে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে দাগি অযোগ্যদের নামের তালিকা প্রকাশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশমতো গত আগস্ট মাসে অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করে কমিশন। তালিকায় ১৮০৬ জন অযোগ্য প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত এই তালিকা নিয়েই আপত্তি সুপ্রিম কোর্টের। সুপ্রিম কোর্টের বক্তব্য দাগি অযোগ্যদের তালিকা অস্পষ্ট। নতুন করে অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
Advertisement
এদিন আদালতে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার বলেন, ‘বিস্তারিত ভাবে তালিকা প্রকাশ করতে হবে। সেখানে বিষয়ভিত্তিক, সংরক্ষণভিত্তিক তথ্য থাকতে হবে।’ এসএসসির আইনজীবী কপিল সিব্বল এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দাগি অযোগ্যদের যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে সকলের নাম রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি সঞ্জয় বলেন, ‘কোনও গোপনীয়তা রাখবেন না। বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করে আবার দাগি অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করুন। বিষয়টি নিয়ে না হলে আবার জটিলতা তৈরি হবে। আবার কেউ অন্য কিছু নিয়ে আদালতে আসবেন।’ কমিশনের তরফ থেকে এই নির্দেশ মেনে অযোগ্যদের তালিকা পুনরায় প্রকাশ করা হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৪ নভেম্বর।
Advertisement
উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। কমিশনের তরফে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই ফলপ্রকাশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। এসএসসির পরীক্ষার পরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছিলেন, পুজোর পরেই ফলপ্রকাশ করা হবে। নভেম্বরের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে ইন্টারভিউ প্যানেল। ইতিমধ্যে নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির মডেল উত্তরপত্র আপলোড করা হয়েছে। তার চ্যালেঞ্জ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে সঠিক উত্তর আপলোড করা হবে। প্রায় ৫০০-র বেশি চাকরিপ্রার্থী উত্তর চ্যালেঞ্জ করেছেন বলে এসএসসি সূত্রের খবর।
Advertisement



