ভোটার তালিকা সংশোধনে কড়াকড়ি, খসড়া তালিকায় নাম না থাকলে নতুন ফর্মে দেখাতে হবে ২০০২ সালের যোগসূত্র

নির্বাচন কমিশন এখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করেনি পশ্চিমবঙ্গের ভোটারদের খসড়া তালিকা। ১৬ তারিখ সকাল থেকেই  ভোটাররা দেখে নিতে পারছেন যে, খসড়া তালিকায় তাঁদের নাম আছে কিনা। এই তালিকায় যাঁদের নাম বাদ পড়েছে তাঁদের ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য নতুন করে আবেদন করতে হবে। সেক্ষেত্রে তাঁদের পূরণ করতে হবে নির্বাচন কমিশন থেকে দেওয়া ফর্ম ৬। এই বিষয়েও কড়া নির্দেশ রয়েছে কমিশনের। নতুন করে নাম তোলার জন্যও  ভোটারদের এসআইআর প্রক্রিয়ার আওতায় আসতে হবে। ফর্ম ৬ এবং এনুমারেশন ফর্মের মত অন্য একটি ফর্ম একসঙ্গে দেওয়া হবে আবেদনকারীদের।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, গত ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যে মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫২৯ জন। তবে প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় জায়গা পেয়েছে ৭ কোটি ৮ লক্ষ ১৬ হাজার ৬৩১ জন ভোটারের নাম। ফলে প্রায় ৫৮ লক্ষ ২০ হাজার ৮৯৮ জন ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। কমিশন সূত্রে খবর, বাদ পড়া নামগুলির মধ্যে মূলত মৃত, স্থানান্তরিত, নিখোঁজ ও ভুয়ো ভোটারেরাই রয়েছেন। পাশাপাশি এমন ৫৭ হাজার ৬০৪ জন ভোটারও রয়েছেন, যাঁরা এনিউমারেশন ফর্ম পূরণ করেননি। তাঁদের নামও খসড়া তালিকায় নেই।

যাঁরা আগে এনুমারেশন ফর্ম জমা দেননি বা যাঁদের নাম খসড়া তালিকায় নেই, তাঁদের নতুন করে ভোটার তালিকায় নাম তুলতে হবে। এর জন্য ফর্ম ৬ পূরণ করা বাধ্যতামূলক। তবে শুধু ফর্ম ৬ নয়, তার সঙ্গে আরও একটি আলাদা ফর্ম পূরণ করতে হবে, যা দেখতে অনেকটাই এনিউমারেশন ফর্মের মতো। সেখানে আবেদনকারীকে ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে নিজের বা পরিবারের যোগসূত্রের প্রমাণ দিতে হবে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, আবেদনকারীর নিজের নাম যদি ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় থাকে, তবে সেই তথ্য জানাতে হবে তা না থাকলে বাবা, মা, ঠাকুরদা বা ঠাকুরমার মধ্যে যাঁর নাম ওই সময়ের ভোটারতালিকায় ছিল, তাঁর তথ্য দিতে হবে।


আগে যেখানে শুধু জন্মতারিখের প্রমাণ ও অভিভাবকের ভোটার কার্ডের তথ্য দিলেই চলত, এবার সেখানে নিয়ম আরও কঠোর করা হয়েছে।  এনিউমারেশান ফর্মে ঐচ্ছিকভাবে আধার নম্বর দেওয়ার জায়গা ছিল। কিন্তু এই নতুন ফর্মে আধার নম্বর দেওয়ার কোনও জায়গা রাখা হয়নি।এই ফর্মেও তিনটি অংশ থাকবে। উপরের অংশে দিতে হবে আবেদনকারীর তথ্য, নীচের দু’টি অংশে দিতে হবে ২০০২ সালের তালিকার সঙ্গে নিজের বা আত্মীয়ের যোগসূত্রের বিবরণ। বুথ স্তরের আধিকারিকের(বিএলও) সইও বাধ্যতামূলক।

কমিশনের দাবি, যাঁরা এনিউমারেশন ফর্ম জমা দিয়েছিলেন, তাঁদের সকলের নামই খসড়া  তালিকায় রয়েছে, এমনকি যাঁরা শুধু সই করে জমা দিয়েছিলেন তাঁদেরও। জীবিত কাউকে মৃত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। পাশাপাশি অন্য রাজ্য থেকে এসে পশ্চিমবঙ্গে ভোটার হতে চাইলে  ফর্ম ৮ পূরণ করার মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।  সেক্ষেত্রেও অতিরিক্ত তথ্যসহ নতুন ফর্ম পূরণ করতে হবে।