কালীপুজোর রাতে কলকাতার আকাশ আলোকিত হলেও, শব্দের দাপটে বিঘ্নিত হয়েছে শহরের শান্তি। সুপ্রিম কোর্ট ও হাই কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে বাজি পোড়ানো যাবে না। তবুও সেই নির্দেশ যেন কানে তোলেনি অনেকে। রাত বাড়তেই কলকাতার নানা প্রান্তে শুরু হয় শব্দবাজির তাণ্ডব। তারই ভয়ানক পরিণতি দেখা গেল বাঁশদ্রোণীতে। আতঙ্কে মেট্রোয় উঠে পড়ল এক পথকুকুর।
সোমবার রাতে কালীপুজো উপলক্ষে অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা দেরিতে চলছিল মেট্রো। প্ল্যাটফর্ম ছিল ফাঁকা, যাত্রীও কম। সেই সময় হঠাৎই বাঁশদ্রোণী স্টেশনে মেট্রোর দরজা খুলতেই দৌড়ে উঠে পড়ে একটি পথকুকুর। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই কামরার ভিতর ছুটোছুটি শুরু করে দেয় কুকুরটি। যাত্রীদের একাংশ প্রথমে হতবাক হয়ে যায়, পরে ভয় পেয়ে যায় কেউ কেউ। নিরাপত্তারক্ষীরা ছুটে আসেন। কিছু সময় পর শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশনে পৌঁছে কুকুরটিকে উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।
মেট্রোর এক যাত্রীর কথায়, ‘কুকুরটি এমনভাবে দরজা দিয়ে দৌড়ে ঢুকল, বোঝাই যাচ্ছিল খুব ভয় পেয়েছে। বাইরে বাজির আওয়াজে টালমাটাল অবস্থা।’ জানা গিয়েছে, রাত সাড়ে দশটার পর থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাজি পোড়ানোর অভিযোগ আসতে থাকে। দক্ষিণ কলকাতা থেকে উত্তর, কোথাওই যেন শব্দ দূষণের লাগাম টানা যায়নি। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কন্ট্রোল রুমে রাত সাড়ে ন’টার মধ্যে জমা পড়ে ১৭টি অভিযোগ। সবকটিই বাজি সংক্রান্ত।
পরিবেশবিদরা বলছেন, শব্দবাজির প্রভাবে শুধু মানুষ নয়, পশু-পাখিদেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। কুকুর, বিড়াল, এমনকি পাখিরাও ভয় পেয়ে আশ্রয় হারাচ্ছে বারবার। কালীপুজোর রাতে বাঁশদ্রোণীর এই ঘটনা যেন সেই বাস্তবতাকেই তুলে ধরলো। আইন থাকলেও প্রয়োগে ফাঁক, আর সেই ফাঁকেই আতঙ্কে দৌড়চ্ছে শহরের নিরীহ প্রাণীরা। উৎসবের আনন্দের মাঝেও তাদের যন্ত্রণার ছবিটাই যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেল বাঁশদ্রোণীর এই ঘটনাটি।