কোভিড বিধি মেনেই পুজো কার্নিভাল নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত, এবারও ক্লাবগুলিকে ৫০ হাজার টাকা দেবে রাজ্য, বিদ্যুতের বিলে বড় ছাড়: মমতা

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo: SNS)

কোভিড প্রােটোকল মেনে গত বছর ধুমধাম করে পুজো করা যায়নি। বছর ঘুরে গেলেও কারােনার আতঙ্ক কাটেনি। উল্টে অক্টোবরেই করােনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। এরমধ্যেই রাজো উৎসবের সুচনা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডাের স্টেডিয়ামে কলকাতার পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল রাজ্য প্রশাসন সেখানেই সংক্রমণের মধ্যে পুজো করতে হলে করােনা বিধিগুলি ঠিকমতাে মেনে চলতে হবে বলে জানিয়ে দিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন অভয় দিয়ে বলেন করােনাবিধি মেনে নিশ্চিন্তে পুজো করুন। আগের বছর যে যে নিয়ম বলবৎ ছিল, এবারও তাই থাকবে। নতুন করে কোনও নিয়ম জারি করার নেই। শুধু কঠোরভাবে পালন করতে হবে করােনাবিধি। করােনার কারণে বর্তমানে রাজ্যে জারি রয়েছে একাধিক বিধিনিষেধ। রাত ১১ টা থেকে ভাের ৫ টা পর্যন্ত জারি থাকে নাইট কারফিউ।

কিন্তু পুজোর সময় বহু মানুষই রাতে প্রতিমা দেখতে বেরােন। তাঁদের কথা বিবেচনা করে পরবর্তী কালে নাইট কারফিউ তুলে দেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত গত বছর ট্রেন চললেও রাতে পুজো দেখায় ছাড় ছিল। রাজ্যে মােট পুজোর সংখ্যা। কমপক্ষে ৩৬ হাজার। এছাড়াও বহু ছােট ছােট পুজো হয় রাজ্যজুড়ে।


প্রত্যেক পুজো কমিটিকে নিজেদের উদ্যোগে মাস্ক বিলি করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এই বিষয়ে করপােরেট সংস্থাগুলিকে কাজে লাগাতে বলেন ক্লাব চত্বরে স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মাঝেমধ্যেই মণ্ডপ চত্বর স্যানিটাইজ করতে হবে।

মমতা জানিয়েছেন, ১৫ অক্টো দশমী থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গা প্রতিমার বিসর্জন পর্ব চলবে। ২০২০ সালে পুজো শেষের অন্যতম আকর্ষণ রেড রােডের পুজো কার্নিভাল করা যায়নি। এই বছর কি কার্নিভাল হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন রাতের ঠাকুর দেখায় এখনও পর্যন্ত ছাড়ের পক্ষে রাজ্য সরকার। ১৮ অক্টোবর কার্নিভাল করতেও উৎসাহী।

কিন্তু সবটাই নির্ভর করছে পুজোর সময় করােনা সংক্রমণের পরিস্থিতির ও। উপনির্বাচনের পরে করােনা সংক্রান্ত পরিস্থিতি বিবেচনা করার পরে কার্নিভাল সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সংক্রমণের ফলে অনেক পুজো কমিটিরই অর্থনৈতিক অবস্থা সঙ্গীন।

সে কথা বিবেচনা করে গত বছর রাজ্য সরকার নথিভুক্ত কমিটিগুলিকে ৫০ হাজার করে আনুদান দিয়েছিল এবারও পুজো কমিটি গুলিকে সেই অনুদান দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। ৫০ শতাংশ ছাড় মিলবে বিদ্যুতের বিলেও। মকুব করা হবে লাইসেন্স ফিও।

এদিন রাজ্যের মুখ্যসচিব পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে জানান রাজ্যে করােনা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে পুজো কমিটিগুলিকে কোভিড বিধি মানতেই হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। তাই নৈতিকতা ও মানবিকতার বিচারে উৎসবের দিনগুলিতে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করে থাকে রাজ্য সরকার।

গত বছর করােনা পরিস্থিতির জেরে ধুমধাম করে পুজো করা সম্ভব হয়নি। তাহলেও নথিভুক্ত কমিটিগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। এবারও সেই আর্থিক সাহায্য করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, পুজোর প্রয়ােজনীয় অনুমতি নিতে এবারও ওয়ান উইন্ডাে সিস্টেম চালু থাকবে। মিলবে প্রয়ােজনীয় আর্থিক ছাড়ও। যার সুবিধে পাবে পুজো কমিটিগুলি।

প্রসঙ্গত পুজো কমিটিগুলির চাহিদার কথা মাথায় রেখে কোমর বাঁধছে বিদ্যুৎ দফতর। পঞ্চমী থেকেই মণ্ডপে বিদ্যুতের সংযােগ দেওয়া হাবে। তবে কেউ চাইলে মহালয়া থেকেও সংযােগ দেওয়া হবে পারে। পুজো কমিটির আবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শুধু তাই নয়, পঞ্চমী থেকে বিভিন্ন জেলাসহ কলকাতায় ২৪ ঘন্টা কন্ট্রোল রুম খােলা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। যেখানে প্রয়ােজনমতাে অভিযােগ জানানাে যাবে। আমজনতার সমস্যা সমাধানের জন্য পুজোর সময় ২৪ ঘন্টা অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে থাকবে বিদ্যুৎ দফতর। এদিন একথা জানিয়ে দিলেন বিদ্যুৎমন্ত্রী।