প্রাইম টাইমে সব হলে দেখাতেই হবে অন্তত একটি বাংলা ছবি

মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে মিলল সমাধান সূত্র। রাজ্যের সব সিনেমা হলে দিনের প্রাইম টাইমে অর্থাৎ দুপুর ৩টে থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত অন্তত একটি করে বাংলা সিনেমা দেখাতেই হবে। এমনই নির্দেশিকা জারি করেছে নবান্ন। বুধবার এই নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি।

ধূমকেতু এবং ওয়ার ২ মুক্তি পাচ্ছে একই দিনে। সিনেমা হল নিয়ে সমস্যায় জর্জরিত হওয়ার ব্যাপার নতুন নয়। বড় কোনও হিন্দি সিনেমার মুক্তি আসন্ন হলে বাংলায় বাংলা সিনেমার হল পেতে মুশকিল হয়। এই আবহে বাংলা সিনেমাকে বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছিলেন টলিউডের পরিচালক-প্রযোজকরা। এরপর এই নিয়ে নন্দনে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, প্রযোজক নিসপাল সিং রানে, সুদীপ সাহা, স্বরূপ বিশ্বাস সহ আরও অনেকে।

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অরূপ বিশ্বাস জানান, বৈঠকে যে সব সমস্যা নিয়ে কথা হয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে সবগুলিরই সমাধান হয়েছে। বাংলা সিনেমাকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। বাংলা ভাষাকে যেভাবে অবহেলিত হতে হচ্ছে তার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলা সিনেমা যেন মানুষ আরও বেশি দেখতে পারেন তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হল যেন বাংলা সিনেমা দেখানোর স্লট বেশি পায় সেই ব্যবস্থাই করা হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের যে কোনও সিনেমা হলে, মাল্টিপ্লেক্সের প্রতিটি স্ক্রিনে ৩৬৫ দিন অর্থাৎ গোটা বছর বিকেল ৩টে থেকে ৯টার মধ্যে অন্তত একটা বাংলা ছবি দেখাতে হবে, এমনই স্থির হয়েছে।


বাংলা ছবি নিয়ে এই নির্দেশিকা ১৯৫৪ সালের পশ্চিমবঙ্গ চলচ্চিত্র আইন মেনে জারি করা হয়েছে। নবান্ন জানিয়েছে, জারি হওয়ার সময় থেকেই এই নির্দেশিকা কার্যকর করতে হবে। যতদিন নতুন কোনও নির্দেশিকা আসতে ততদিন এই নির্দেশিকাই কার্যকর থাকবে। কোনও হল এই নির্দেশিকা না মানলে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারে।

উল্লেখ্য, আগে বেলা ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সময়কে প্রাইম টাইম বলা হত। সেই সুযোগে বাংলা সিনেমাকে বেলা ১২টার শো দেওয়া হত। সেই কারণে এবার থেকে দুপুর ৩টে থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সময়কে প্রাইম টাইম হিসেবে ধরা হবে।

মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন বলেন, ‘আজকের দিনটি ঐতিহাসিক দিন। মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত সব অভিনেতা অভিনেত্রী, কলাকুশলীরা সাদরে গ্রহণ করেছেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন। শুধুমাত্র সিনেমার জন্য নয়, বাংলার সংস্কৃতি, অস্মিতাকে আরও পুনরুজ্জীবিত করবে।’

সম্প্রতি বাংলা ভাষা নিয়ে সন্ত্রাসের অভিযোগে প্রতিবাদে নেমেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাষা আন্দোলন রাজনীতির আঙিনায় ঢুকে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে নবান্নের এই নির্দেশিকা জারি হওয়ার ঘটনা তাৎপর্যপূর্ণ।