শিশুমনের ভাবনা নিয়ে বিশেষ কর্মশালা

লবণ হ্রদ বিদ্যাপীঠের বর্ণমালা অডিটোরিয়ামে আজ রবিবার অনুষ্ঠিত হল “প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি”, যার মূল আলোচ্য বিষয় ছিল — “শিশুমন সিলেবাসের বাইরে কী-কী চায়”। অনুষ্ঠানটিঊ আয়োজনে ছিল শিক্ষক-গবেষকদের প্রতিষ্ঠান অনুসন্ধান সোসাইটি ।
এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি ডঃ পার্থ কর্মকার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডঃ দীপক রঞ্জন মণ্ডল, ডঃ দেবব্রত মজুমদার, লিয়াকত আলি, আরফান বিশ্বাস সহ আরও অনেকে। ‘শিশুমন সিলেবাসের বাইরে কী কী চায়’ এই নিয়ে একটি ছোট পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পাশের রাজ্য ত্রিপুরা থেকে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষক কিচেন গার্ডেন বিশারদ মনোজ রায়।
তিনি কিচেন গার্ডেনের উপযোগিতা তুলে ধরেন এবং এই কর্মশালার স্থান কলকাতার সল্ট লেকে অবস্থিত লবণহ্রদ বিদ্যাপীঠ প্রাঙ্গণে গাছের চারা রোপন করেন। তাঁকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সজল কান্তি মন্ডল সহ অন্যান্য সকল অতিথিবৃন্দ।অনুষ্ঠানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকবৃন্দ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানটি ছিল দুই পর্বে বিভক্ত। প্রথম পর্বে অনুষ্ঠিত হয় এক প্রাণবন্ত প্যানেল আলোচনা, যেখানে এক্সপার্ট মণ্ডলী সিলেবাসের বাইরে শিশুর মনোজগৎ, আগ্রহ ও সৃজনশীল বিকাশ নিয়ে মত বিনিময় করেন। আলোচনায় উঠে আসে, শিশুরা শুধু পড়াশোনা নয়, বরং খেলা, ঘোরা, গল্প শোনা, বন্ধুদের সঙ্গে টিফিন ভাগ করা ও এমনকি ভালোবেসে শিক্ষকদের সঙ্গেও ভাগ করে নেয় ।
দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিয়ে আরেকটি প্যানেল আলোচনা হয়, যেখানে শিশুদের মানসিক বিকাশ, সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি স্বাধীনভাবে খেলাধুলা, সৃজনশীল কাজ ও চিন্তাভাবনার সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে বাবা-মা ও শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকা আবশ্যক। পরে একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ডঃ দীপক রঞ্জন মণ্ডল। সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন বিশিষ্ট শিক্ষক ও সাংবাদিক নায়ীমুল হক ও জহরলাল নাইয়া মহাশয় । অনুষ্ঠানের শেষে অনুসন্ধান সোসাইটির সম্পাদক গৌরাঙ্গ সরখেল সকল অতিথি ও অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান ও অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীদের পার্টিসিপেশন সার্টিফিকেট প্রদান করা হয় ।
 এদিনের অনুষ্ঠানের সহযোগী সংস্থা হিসেবে যুক্ত ছিল — চেকমেট ক্যারিয়ার, বেঙ্গল মডেল চাইল্ড ইনস্টিটিউট ও বেস্ট এডুকেশনাল হাব। আজকের এই উদ্যোগে শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকরা একমত হন যে, শিশুর শিক্ষা যেন শুধুমাত্র বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আনন্দ, সৃজনশীলতা ও মানবিকতার শিক্ষা দেয় — সেটাই এখন সময়ের দাবি।