বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের পড়াশোনার জন্য এবার বিশেষ ধরনের ল্যাবরেটরি রাজ্যে। স্কুলে পড়াশোনা করার সুযোগ পেলেও বিজ্ঞানের জটিল বিষয়গুলি বুঝতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের। সেই সমস্যা দূর করতেই উলুবেড়িয়ার জগৎপুর আনন্দভবন ডেফ অ্যান্ড ব্লাইন্ড স্কুলের তরফে নেওয়া হয়েছে এক অভাবনীয় উদ্যোগ। এই স্কুলে তৈরি হয়েছে বিশেষ ধরনের ল্যাবরেটরি। উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন এই ল্যাবে জটিল বিষয়গুলি সহজেই বুঝতে পারবে পড়ুয়ারা।
স্কুলের পাঠ্যসূচিতে অনেক বিষয় পড়ানো হয়। কিন্তু কিছু পড়ুয়ার শ্রবণ ও বাকশক্তি না থাকার ফলে তারা সবটা জানতে পারে না অথবা বুঝতে পারে না। যেমন,পৃথিবী মহাশূন্যে তার নিজের কক্ষপথে অবিরাম ঘুরে চলেছে, আবার কীভাবে পৃথিবী প্রবল বেগে সূর্যের চারপাশে ঘুরে চলেছে, এই বিষয়গুলি তাদের বোঝানো খুবই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ ধরনের সায়েন্স ল্যাব চালু হওয়ায় সেই কাজটা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আনন্দভবন ডেফ অ্যান্ড ব্লাইন্ড স্কুলের এই বিশেষ ধরনের ল্যাব তৈরির জন্য ৫ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছে বেঙ্গালুরুর ‘সমর্থনম ট্রাস্ট’।
স্কুলে এই ল্যাব তৈরির প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অজয় দাস জানান, এই স্কুলের বেশিরভাগ পড়ুয়া দৃষ্টিহীন আবার অনেকের শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়ারা এই স্কুলে পড়তে আসে। তিনি বলেন, ‘ এই ইন্টার্যাক্টিভ বিজ্ঞান ল্যাবে পদার্থবিদ্যা, জীববিদ্যা, রসায়ন, সব কিছুই বিভিন্ন মডেলের মাধ্যমে সহজ করে বোঝানো যায়।
আজ বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা হাতেকলমে এবং স্পর্শের মাধ্যমে বুঝতে পারছে, কীভাবে সাইক্লোন তৈরি হচ্ছে, মানুষের শরীরে ঠিক কোন জায়গায় কিডনি ও পাকস্থলী থাকে এবং কীভাবেই বা সম্পন্ন হয় পাচন ক্রিয়া। এই বিজ্ঞান ল্যাবের মাধ্যমে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের কাছে বিজ্ঞানকে অনেক আকর্ষণীয় করে তোলা সম্ভব হবে। আগে এই ধরনের পড়ুয়ারা বিজ্ঞানের প্রতি তেমন আগ্রহ দেখাত না। এখন সেই ঘাটতি অনেকটাই পূরণ করা যাবে।’