সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে সােশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানাে ভুয়াে খবর নিয়ে উদভ্রান্ত হয়ে পড়েছিল এই শহর। সেই ভ্রান্তি কাটল বর্ষীয়ান অভিনেতার শারীরিক অবস্থার উন্নতির খবর পেয়ে। দক্ষিণ কলকাতার যে বেসরকারি হাসপাতালে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ভর্তি রয়েছেন, বুধবার দিনের শেষে জানা গিয়েছে তাঁর বাইপ্যাপ সাপাের্ট আর লাগছে না। অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সচল রয়েছে। তিনি চোখও খুলেছেন। সংক্রমণের চোদ্দ দিন পরে এদিন ফের তাঁর করােনা পরীক্ষা করা হয়। সন্ধেয় তাঁর রিপাের্ট নেগেটিভ এসেছে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, দু’বার প্লাজমা থেরাপিতে কাজ হয়েছে। তবে শরীরে সােডিয়ামের মাত্রাবৃদ্ধি উদ্বেগে রেখেছে চিকিৎসকদের। সেইসঙ্গে রয়েছে তাঁর কো-মরবিডিটি নিয়ে চিন্তা। বিশেষ করে তাঁর প্রস্টেট ক্যানসার নতুন করে ফিরে আসার সম্ভাবনা ডাক্তারদের চিন্তার কারণ। করােনার জন্য সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কে এনসেফালাইটিস নিয়েও উদ্বিগ্ন মেডিকেল টিমের ডাক্তাররা।
Advertisement
এই অবস্থার মধ্যেই মঙ্গলবার থেকেই সােশ্যাল মিডিয়া খবর ছড়ানাে শুরু হয়েছে। সােশ্যাল মিডিয়ায় লেখা হয়েছে, ‘চলে গেলেন বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।’ বুধবার সােশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাঁর আত্মার শান্তিকামনা পর্যন্ত করে ফেলেছেন।
Advertisement
এই ভুয়াে খবর ছড়ানাের পর থেকেই দেশ বিদেশে ছড়িয়ে থাকা এই কিংবদন্তি অভিনেতার গুণগ্রাহীরা ফোন করে সঠিক খবর জানতে চেয়েছেন। তখন কেউ জানতে পেরেছেন এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। কারও কাছে তার খবর সত্য আর মিথ্যের দ্বন্দ্ব।
তবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে এই ধরনের গুজব নিয়ে ক্ষোভ জানালেন সৌমিত্র কন্যা পৌলমী। তিনি ফেসবুকে পােস্ট করলেন। আমার করােনা আত্রান্ত বাবার শারীরিক পরিস্থিতি মারাত্মক উদ্বেগে রয়েছি। এই উৎকণ্ঠার মাঝে সােশ্যাল মিডিয়ার ‘ভুয়াে’ খবর দেখে আমরা মর্মাহত, দুঃখিত।
এক কথায় আমাদের মন ভেঙে গিয়েছে। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন বাবার ছবি এবং মেডিকেল বুলেটিন কোনওরকম অনুমতি ছাড়াই ব্যাপকভাবে সােশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে। দয়া করে ওঁকে একটু সম্মান দিন, ব্যক্তিগত স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা করুন। এইটুকু সম্মান বােধহয় ওঁর প্রাপ্য। দয়া করে এই ছবি এবং তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।
হাসপাতালের বেডে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের চিকিৎসাধীন ছবি এবং তাঁকে নিয়ে ভুয়াে খবর রটে যাওয়ায় ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পৌলমী। হাতের মুঠোয় খবর ছড়ানাের উপায় থাকলেই যে সত্য-মিথ্যে যাচাই না করে খবর রটানাে কখনই উচিত নয়। ভ্রান্ত খবর যে কতটা উদভ্রান্ত করে দিতে পারে প্রিয়জনকে, এ ঘটনাই তার প্রমাণ।
Advertisement



