দেশের শীর্ষ আদালতের আদেশ মেনে অবশেষে ঘরে ফেরানো হচ্ছে সোনালি বিবিকে। মালদহ সীমান্ত দিয়ে ভারতে ফিরছেন বীরভূমের বাসিন্দা সোনালি বিবি ও তাঁর আট বছরের সন্তান। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন গর্ভবতী যুবতী সোনালি বিবি। অভিযোগ, কোনো অভিযোগ ছাড়াই শুধুমাত্র বাংলায় কথা বলার অপরাধে বোর্ডের গার্ড ফোর্স বা বিএসএফ তাঁকে বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে অসম সীমান্ত দিয়ে পুশব্যাক করা হয়েছিল বাংলাদেশে।
এরপরই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন সোনালির পরিবার। বিষয়টিকে গুরুত্বপূর্ণ আখ্যা দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় অবিলম্বে ফিরিয়ে আনতে হবে সোনালি বিবিকে। এরপরই কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করে। শুক্রবারই তাঁরা ফিরছেন দেশে। এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে হইচই কম হয়নি। তৃণমূলের একাধিক নেতা বিষয়টি নিয়ে সরব হন। সোনালি নিজেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান।
সোনালি বিবির মামলা সুপ্রিম কোর্টে উঠলে সেই সময় শুনানিতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা নিম্ন আদালতকে জানান, ভারত সরকার নিয়ম মেনে এবং মানবিকতা বজায় রেখেই তাঁদের দেশে ফেরাবে। আদালত স্পষ্ট নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে সোনালি ও তাঁর সন্তানকে ভারতের মাটিতে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং একই সঙ্গে সরাসরি বীরভূমে তাঁর বাবার কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও করতে হবে।উল্লেখ্য, বাংলাদেশ–প্রান্তে নবাবগঞ্জে ছিলেন সোনালি খাতুন ও তাঁর সন্তান। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন মফিজুল শেখ, যিনি জানান, জামিন পাওয়ার পর স্থানীয় পুলিশ নিরাপত্তা দিয়েছে।
তাঁদের থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তবে সোনালি প্রথম থেকেই স্পষ্ট অনুরোধ করেন, তিনি নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তাই দ্রুত দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। ভারতীয় হয়ে সন্তানকেও ভারতেই জন্ম দিতে চান।
এদিকে এনিয়ে কেন্দ্রকে কঠোর ভাষায় কার্যত তুলোধনা করেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। আদালতের পর্যবেক্ষণ, যখন সোনালির বাবা ভারতের নাগরিক, তখন সন্তান হয়ে তিনি বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত হলেন কীভাবে? এর ভিত্তি কী? নাগরিকত্ব নির্ধারণের পদ্ধতি নিয়ে এক্ষেত্রে প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত।