সংখ্যালঘু নয়, মতুয়া এলাকাতেই বেশি আনম্যাপড ভোটার

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

রাজ্যে এসআইআর ঘোষণার পর থেকেই বিজেপি নেতারা বারবার দাবি করে আসছিলেন যে, বিপুল সংখ্যক সংখ্যালঘু ভোটারের নাম বাদ যেতে চলেছে। এই দাবি ঘিরে শুরু থেকেই প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল। বিজেপির এই দাবিকে ঘিরে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আঁতাতের অভিযোগও উঠেছিল। কিন্তু রাজ্যের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের আগেই সামনে চলে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।

কমিশন সূত্রে জানা যাচ্ছে, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা নয়, বরং মতুয়া অধ্যুষিত এলাকাতেই আনম্যাপড ভোটারের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই এসআইআর বিজেপির কাছে বুমেরাং হতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুরে রাজ্যের খসড়া ভোটার তালিকা কমিশনের ওয়েবসাইট ও রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

একই সঙ্গে জেলা শাসকের দপ্তরেও তালিকা টাঙানো থাকবে। রাজনৈতিক দলগুলিকেও সেই তালিকা দেওয়া হবে। খসড়া তালিকা থেকে যেসব ৫৮ লক্ষের বেশি ভোটারের নাম বাদ পড়েছে, তাঁদের নামের পৃথক তালিকা বুথে বুথে টাঙিয়ে দেওয়া হবে। এরপর শুনানি চলবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কমিশনের নতুন তথ্য বলছে, উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়া জেলার মতুয়া অধ্যুষিত কেন্দ্রগুলিতেই আনম্যাপড ভোটারের হার সবচেয়ে বেশি। এই কেন্দ্রগুলির অধিকাংশেই বিজেপি জয়ী হয়েছিল।


প্রসঙ্গত, সবথেকে বেশি আনম্যাপড ভোটার রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটায়, যা শতাংশের হিসেবে প্রায় ১৪.৫। হাবড়ায় এই হার ১৩.৬। বাগদায় ১২.৭। কল্যাণীতে ১১.৯। অশোকনগরে ১১.৮। বনগাঁ উত্তরে ১১.৩। রানাঘাট উত্তর পূর্বে ১১.২। বনগাঁয় ১০.৮। কৃষ্ণগঞ্জে ১০.৪। রানাঘাট উত্তর পশ্চিমে ১০.৩। রানাঘাট দক্ষিণে ৯.৩। চাকদহে ৯। শান্তিপুরে ৮.৫। কৃষ্ণনগর উত্তরে ৭.৫। হরিণঘাটায় ৭.২ শতাংশ ভোটার আনম্যাপড হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।

অন্যদিকে, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলায় আনম্যাপড ভোটারের সংখ্যা তুলনায় অনেক কম। ভগবানগোলায় এই হার ২.৬ শতাংশ। লালগোলায় ১.১। সামশেরগঞ্জে ১। রানীনগরে ০.৯। রঘুনাথগঞ্জে ০.৭। হরিহরপাড়ায় ০.৬। ডোমকলে ০.৪ শতাংশ ভোটার আনম্যাপড। মালদহের সুজাপুরে এই হার ০.৫ শতাংশ।

কমিশন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রায় ৩১ লক্ষ আনম্যাপড ভোটারকে শুনানির জন্য ডেকে পাঠানো হবে। এই তালিকা নিয়ে কোনও দাবি বা আপত্তি থাকলে তা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে হবে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি।