শীর্ষ আদালতে ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন রেশন দুর্নীতিতে জড়িত শেখ শাহজাহান। জামিন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সোমবার এই আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহারের বেঞ্চে মামলাটি ওঠে। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বক্তব্য, ‘কোনোধরনের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়নি আপনার। কলকাতা হাইকোর্ট নিয়মিত শুনানি করছে এই মামলার। আপনি প্রথমে কলকাতা হাইকোর্টে গিয়ে আবেদন করুন। আপনি কীভাবে সংবিধানের ৩২ তম ধারায় সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন?’ আদালতের এই মন্তব্যের জেরে এখনও জেলেই থাকতে হবে সন্দেশখালি কাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানকে।
গত ৩১ অক্টোবর জামিন চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন শাহজাহান। তাঁর বক্তব্য, ৩০ মিনিটের ব্যবধানে দুটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে তাঁর নামে। এর মধ্যে একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। তবে দ্বিতীয় মামলাটিতে কোনোরকম উচ্চবাচ্য করছে না কলকাতা হাইকোর্ট। সেকারণেই জামিনের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শেখ শাহজাহান। সোমবার তাঁর পক্ষের আইনজীবী রজত সিনহা রায়ের বক্তব্য ছিল, একই অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যা এমনিতেই বেআইনি। সিবিআইয়ের তরফে এই দুটি মামলা সংযুক্তিকরণের আবেদন জানানো হয়েছে। তবে সোমবার শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, জামিনের আর্জি নিয়ে অথবা যা কিছু বলার আছে সব হাইকোর্টে গিয়ে যাতে জানানো হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে রেশন দুর্নীতিতে নাম জড়ায় শেখ শাহজাহানের। এরপরে এই মামলার তদন্তের দায়ভার নেয় ইডি। মামলার তদন্তের জন্য শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। এরপরে সেখানে গিয়ে ইডি আধিকারিকদের উপর মারধর করা হয়। সরবেড়িয়া ঢুকতেই ইডি আধিকারিকদের দিকে লাঠি, ইট-পাথর নিয়ে তেড়ে আসে হাজার হাজার মহিলা ও পুরুষরা। এরপর তাঁদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়, আধিকারিকদের মারধরেরও পরিকল্পনা ছিল দুষ্কৃতীদের। ঘটনার ৫৫ দিন পরে শেখ শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করা হয়। আরও একাধিক মামলা দায়ের করা হয় তাঁর নামে। এই মামলায় জামিনের আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন শাহজাহান। এরপরেই সোমবার আদালতের নির্দেশ এই নিয়ে তাঁকে হাইকোর্টে আবেদন করতে হবে।