সরকারি স্কুলে গ্রুপ ডি কর্মীর কাজ করছে রোবট

কল্যাণীর সরকার পোষিত স্কুলে পড়ুয়াদের বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর পাশাপাশি একজন গ্রুপ ডি কর্মীর কাজ করছে একটি রোবট। এই রোবটের নাম সানন্দা। তার জন্য প্রায় কোনও খরচই করতে হয় না স্কুল কর্তৃপক্ষকে। কারণ এই রোবট বেতন নেয় না। শুধু রোবটটি তৈরি করতে এককালীন খরচ ও মেনটেন্যান্সের জন্য খরচ হয়। ভয়েস কমান্ড ও স্ক্রিন টাচের সাহায্যে এই রোবটটি কাজ করে। প্রয়োজনীয় নথিপত্র, খাতা নিয়ে সহজেই কোনও ক্লাস রুম ও টিচারের ঘরে পৌঁছে যায় সে। সর্বোচ্চ ১০ কেজি ওজন বহন করার ক্ষমতা আছে সানন্দার। পশ্চিমবঙ্গে প্রথমবার কোনও স্কুলে গ্রুপ ডি কর্মী হিসেবে একটি রোবটকে কাজে লাগানো হচ্ছে।

কল্যাণীর পান্নালাই ইনস্টিটিউশনের পড়ুয়ারা প্রায়ই দেখতে পায় সানন্দা কোনও নোটিস নিয়ে ক্লাসরুমে প্রবেশ করছে। শিক্ষক সেই নোটিস গোটা ক্লাসকে পড়ে শোনাচ্ছেন। আবার সই করে অন্য ক্লাসের উদ্দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে রোবটটিকে। জানা গিয়েছে, এই স্কুলের প্রাক্তনী সন্দীপ মুখোপাধ্যায়ের অর্থ সাহায্যে হায়দরাবাদের একটি প্রযুক্তি সংস্থা সানন্দাকে নির্মাণ করেছে। ১৯৯০ সালে এই স্কুল থেকেই উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছিলেন সন্দীপ। তিনি খড়গপুর আইআইটির প্রাক্তনী। বর্তমানে তিনি দুবাইতে নিজের তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবসা চালান। চলতি বছরেই তিনি নিজের স্কুলকে সাহায্য করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তার সাহায্যেই দুটি স্মার্ট ক্লাসরুম ও সানন্দাকে পায় স্কুল। এর জন্য মোট ৪৬.৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।

সানন্দা বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, সাওতালি বা কুড়মালি-সহ একাধিক ভাষা বুঝতে পারে। এই সব ভাষার মধ্যে যে কোনও ভাষায় তাঁকে নির্দেশ দেওয়া যায়। কিছু প্রশ্নের উত্তরও দিতে সক্ষম সানন্দা। কল্যাণীর স্কুলে আপাতত শুধু বাংলাতেই কথা বলছে সে। এত গুণ থাকলেও সে সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করতে পারে না। তাই সানন্দা বর্তমানে স্কুলে তৃতীয় তলাতেই গ্রুম ডি কর্মী হিসেবে কাজ করছে। এই ফ্লোরেই রয়েছে শিক্ষকদের ঘর এবং ৮টি ক্লাসরুম। স্কুলের প্রাক্তনীর এই উদ্যোগে খুশি পড়ুয়া থেকে শুরু করে পড়ুয়ারা।