সাংবিধানিক পদকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করেন মুখ্যমন্ত্রী, প্রশ্ন রাজ্যপালের

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও জগদীপ ধনকড় (File Photo: IANS)

রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের কোচবিহার সফরকে নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। এবার সেই বিতর্ক গড়াল বিক্ষোভে। বৃহস্পতিবার কোচবিহারের শীতলকুচিতে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। উড়ানে রাজ্যপালের সফরের সঙ্গী ছিলেন সেখানকার সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক।

বিমান থেকে নেমে গাড়িতে করে শীতলকুচিতে পৌঁছন রাজ্যপাল। পেছনে আর একটি গাড়িতে স্থানীয় কিছু বিজেপি নেতা কর্মীও ছিলেন। বিমান থেকে নেমে শীতলকুচিতে যাওয়ার পথেই কালাে পতাকা দেখানাে হয় রাজ্যপালকে।

এদিন তিনি কোচবিহারে গিয়ে সরব হয়ে বলেন, রাজ্যে আইনের শাসন নেই। বৃহস্পতিবার বিএসএফ-এর বিমানে বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে সঙ্গে নেওয়া নিয়েও উঠেছিল বিতর্ক। নিশীথের সঙ্গেই শীতলকুচিতে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে যান ধনকড়।


কথা বলেন আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গে । শাসকদল এই সফরকে নিয়ে রাজনীতির অভিযােগ উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। একজন সাংবিধানিক প্রধান কোনও একটি রাজনৈতিক দলেন সাংসদের সঙ্গে সফর করে অভিযােগের জায়গায় গিয়েছেন প্রথা ভেঙে।

বৃহস্পতিবার শীতলকুচি যাওয়ার পথে গােলকগঞ্জের কাছেই কালাে পতাকা দেখানাে হয় রাজ্যপালকে। এমনকী চতুর্থ দফার ভােটের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে নিহত চার জনের বাস যে গ্রামে সেই জোড়াপাটকি গ্রামে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পােস্টার পড়েছিল এদিন।

অন্যদিকে কোচবিহারে নেমেই বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল তােপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রীর রুিদ্ধে তিনি অভিযােগ করেন, মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছে, প্রশাসনিক নির্দেশে রাজ্যপালকে হাতের মুঠোয় আনা। রাজ্যপাল প্রশ্ন করেন, একটা সাংবিধানিক পদকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন মুখমন্ত্রী।

রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন রাজ্যপাল। বলেন, বাংলা ছাড়া আরও চার রাজ্যে নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু কোথাও এরকম রক্তপাত হয়নি। প্রচারে যাওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রীর উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরেই ভােটের সময় রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন রাজ্যপাল।

বলেন, এখানে আসার আগে ভয়ঙ্কর সব তথ্য পেয়েছিলাম। এসে বুঝলাম, এই তাণ্ডব নৃত্য চোখে দেখা যায়। কোচবিহারের গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের পরেও রাজ্যপালের ঘােষণা এবার তার গন্তব্য অসমে আশ্রয় নেওয়া কোচবিহারের বাসিন্দাদের ত্রাণ শিবির।

এদিকে রাজ্যপালের এই সফরের কড়া সমালােচনা করেছেন তৃণমূলের নেতারা। রাজ্যে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। ক্ষমতায় আসার পরেই শীতলকুচির নিহতদের পরিবারকে সাহায্য ও চাকরি দেওয়ার কথা ঘােষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ভােট পরবর্তী হিংসায় রাজ্যের যেখানেই যে নিহত হয়েছে, তাদেরকে আর্থিক সাহায্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য নতুন দায়িত্ব নেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করা হয়েছে।

কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করতে চাইছেন বলে অভিযােগ করছেন তৃণমূলের নেতারা।