• facebook
  • twitter
Saturday, 5 October, 2024

ঘুড়ির মুখে গানের সুর, আরজি কর কাণ্ডে বিশ্বকর্মা পুজোয় অভিনব প্রতিবাদ

মঙ্গলবার সকাল থেকেই আকাশ ছেয়ে ফেলবে ‘বিচার পাক অভয়া’ বা ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ লেখা ঘুড়ি। মূলত কালো ঘুড়ির উপরে সাদা রঙেই লেখা হবে এই কথাগুলো।

প্রতিবাদ সবসময়ের খুঁজে নেয় নিজেকে প্রকাশের নয়া নয়া ভাষা। ধরাবাঁধা ছকের বাইরে গিয়ে তৈরি হতে থাকে তার নিজের সদা-ডায়নামিক পরিচয়। আরজি কর কাণ্ডের এক মাসের বেশি সময় ধরে চলা আন্দোলনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মহিলা ও প্রান্তিক লিঙ্গের মানুষদের রাত দখল, জুনিয়র চিকিৎসকদের কলকাতা পুলিশকে নকল শিরদাঁড়া ধরিয়ে দেওয়া – এই সব তারই উদাহরণবিশেষ। এইরকমই এক অভিনব প্রতিবাদের মুখোমুখি হতে চলেছে কলকাতা তথা গোটা বাংলা।

আগামী মঙ্গলবার বিশ্বকর্মা পুজো। ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিতে হওয়া এই পুজোর দিনেই মেতে ওঠেন ঘুড়িপ্রেমীরা। এবার ঘুড়ির মধ্যেই বিচারের দাবিকে মিশিয়ে দিতে চাইছেন তাঁরা। পেটকাটি, চাঁদিয়াল, মোমবাতি, বগ্গার গায়ে গায়ে লেখা থাকবে বিচারের বাণী। মঙ্গলবার সকাল থেকেই আকাশ ছেয়ে ফেলবে ‘বিচার পাক অভয়া’ বা ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ লেখা ঘুড়ি। মূলত কালো ঘুড়ির উপরে সাদা রঙেই লেখা হবে এই কথাগুলো।

সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের বিখ্যাত ঘুড়ির দোকান ‘ইন্ডিয়া কাইটস’ আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদের জন্যই বেশ কিছুদিন আগে এরকম ঘুড়ি বানিয়েছিলেন। ঘুড়ির চাহিদা বাড়ায় আরও ঘুড়ি বানান তাঁরা, যা প্রায় সবই বিক্রি হয়ে যায়। মালিক অজিত দত্ত জানান, ‘আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা কয়েকটি ঘুড়ি তৈরি করেছিলাম। ধীরে ধীরে সেই ঘুড়ির চাহিদা বেড়েছে, রবিবার রাত পর্যন্ত প্রায় এই ধরনের ৬০০টি ঘুড়ি আমরা বিক্রি করেছি। আমাদের কাছে আর হাতেগোনা কয়েকটি ঘুড়ি পড়ে আছে। ঘুড়ির ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে যেটুকু বুঝেছি, তা হল পুজো হোক বা উৎসব, নিহত ডাক্তার বোনের বিচারের দাবিতে তারা সরব থাকতে চায়।’ মাত্র ১৫ টাকাতেই পাওয়া যাবে এই ঘুড়ি, জানান তিনি।

আবার, ফ্রিডম ফাইট ক্লাব সংস্থার পক্ষ থেকেও স্লোগান লেখা এরকম ঘুড়ি বিতরণ করা হয়েছে। কোনওটায় লেখা ‘উৎসব হোক ন্যায় বিচারের’, ‘উৎসব হোক আন্দোলনের’, আবার কোনওটায় লেখা ‘লক্ষ কণ্ঠে একই স্বর, বিচার চায় আরজি কর।’

ঘুড়ি মুক্তির প্রতীক। খোলা আকাশে যাতে মুক্তভাবে বিচারের বাণী উড়তে পারে, তাইজন্যই এই প্রয়াস। বিশেষ করে এমন একটা সময়ে এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, যখন আন্দোলন ভুলে উৎসবে ফেরার জন্য ডাক দেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের তরফ থেকে। তাই উৎসবের মধ্যেই আন্দোলনের ভাষ্য খুঁজে নেওয়ার এই অনন্য প্রয়াস।