সিঙ্গুরে কৃষি জমি কমছে, কার্যত স্বীকার করে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী

প্রতীকী ছবি (Photo: iStock)

বুধবার বিধানসভায় সিঙ্গুরে টাটার অধিগৃহীত জমিতে গত আর্থিক বছরে কী কী ফসল উৎপাদিত হয়েছে এবং কত পরিমাণ জমিতে ফসল উৎপাদিত হয়েছে, নিয়ে কৃষিমন্ত্রী আশিস ব্যানার্জিকে প্রশ্ন করেন বাম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী। উত্তরে জানা যায়, ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে ২৬০ একর জমিতে চাষ হয়েছে।

বিরােধীদের তরফে প্রশ্ন ওঠে সিঙ্গুরে কৃষি জমির পরিমাণ কমছে কেন? মুখ্যমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে উত্তর দিতে গিয়ে বলেন, সিঙ্গুরে কৃষিজমির পরিমাণ কমছে কেন, আমি কী করে জানব? আমি তাে কাউকে জোর করে বলতে পারি না, এখানে চাষ করতেই হবে। কেউ চাষ করতে পারে। কেউ বেশি দামে জমি বিক্রি করে দিতে পারে।

সিঙ্গুরের জমিতে চাষের জন্য রাজ্য সরকার সর্বতােভাবে সাহায্য করেছে। সার, বীজ, কিষাণ মাণ্ডি সব দিয়ে কৃষকদের জমি চাষে উৎসাহিত করেছে। তা সত্ত্বেও কৃষা চাষ তে না চাইলে কী করার আছে?


আসলে ২০০৬ সালের পর থেকে কৃষিজমি পতিত জমিতে পরিণত হয়েছে। এরপর ২০১৬ সালে তৃণমূল সরকার সুপ্রিম কোর্টের রায় পেয়ে ওই জমি সিঙ্গুরের কৃষকদের ফেরত দিয়েছে। কিন্তু এই দশ বছর ধরে জমির যে উৰ্ব্বতা কমে গিয়েছে, তার দায় কে নেবে?

মুখ্যমন্ত্রী এদিন পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, সিঙ্গুরে জমি অধিগৃহীত হয়েছিল ৯৯৭.১১ একর। তার মধ্যে ফেরত ৯৫৫.৯০ একর জমি ছিল চাষের উপযােগী। ৪১.২১ একর জমির কোনও মালিককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে ওই পরিমাণ জমি কাউকে ফেরত দেওয়া যায়নি।

তবে যাদের জমি ফেরত পেয়েছে তাদেরকে এককালীন ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যতদিন তারা কৃষিকাজ করে ওই জমিতে ফসল ফলাতে পারছে ততদিন তাদের মাসে ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে অতিরিক্ত ১৬ কেজি চালও মাসে দেওয়া হচ্ছে। জমি চিহ্নিত করার পর, তার সয়েল টেস্ট করা হয়েছে।

২০১৭-১৮ সালে ৬৪১ একর জমিতে চাষ হয়েছিল। কিন্তু এই ২০১৮-১৯ সালে ২৬০ একর জমিতে চাষ হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর অভিমত এই কৃষি জমির পরিমাণ কমে যাওয়ার জন্য রাজ্য সরকার দায়ী নয়। সিঙ্গুরে ফিরিয়ে দেওয়ার জমিতে কৃষিকাজ যাতে হয়, তার জন্য সবরকম সাহায্য করতে প্রস্তুত রাজ্য সরকার।