ফণীর ‘আফটার শক’ -এর পরআগুন ছড়াচ্ছে প্রকৃতি এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাজারও অগ্নিমূল্য। এমনিতেই গরমে শাকসজি ফলমুলের দাম উর্ধ্বমুখী থাকে। সেইসঙ্গে ঈদের জন্য ফলের দামদস্তুর করতে গিয়ে রীতিমতাে ছেঁকা লাগছে।আপাতত তাপমাত্রার পারদ না কমলে বাজারদর কমার কোনও সম্ভাবনাই দেখা যাচ্ছে না।
ফণীর সময় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস নীচে নেমে গিয়েছিল। বর্তমানে সেই তাপমাত্রা তিন ডিগ্রি বেশি হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে।আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে তাপমাত্রা আগামী চার-পাঁচদিন তাপমাত্রা নামার কোনও আশাই নেই। কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের হাঁসফাস অবস্থা। আপাতত বৃষ্টির কোনও পূর্বাভাস নেই।এদিকে ফণী স্থলভাগের বাতাস থেকে জলীয় বাষ্প টেনে নিয়ে যাওয়ায় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কমে গিয়েছে। বুধবার আদ্রর্তার পরিমাণ ছিল সর্বোচ্চ ৯২ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৫৪ শতাংশ। বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকায় অস্বস্তি খুব একটা বাড়ছে না।তেমন ঘামও অনুভব করা যাচ্ছে না।দুপুরের দিকে যে বাতাস বইছে তা বেশ গরম হলেও তাকে গরম লু ’ বলা যাবে না।
Advertisement
তবে আর্দ্রতা বাতাসে না থাকলে বৃষ্টিরও কোনও আগমনবার্তা শােনা যাবে না।স্থানীয় জলাশয় থেকে যেটুকু আর্দ্রতা শােষণ করতে পারছে,তা থেকে এখনই বৃষ্টি হওয়ার মতাে পরিবেশ তৈরি হচ্ছে না। আর বৃষ্টি না হলে প্রকৃতির তাপমাত্রা কমবে না।তেমনি আবার এই গরমে নামবে না বাজারদরও।গরমকালে এমনিতেই শাকসজির দাম বেড়ে যায়। প্রখর রােদে বাজার থেকে ফসল তােলার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা যায়। সেইসঙ্গে শাকসজির তাজা ভাবটা কমে যায় বলে,বাজারে শাকসজির যােগানও কম হয়।ফলে স্বাভাবিক কারণেই চড়া দাম থাকে শাক-সব্জির।চন্দ্রমুখী,আলুর দাম ২২ থেকে ২৪ টাকা হয়ে গিয়েছে।আদা ও লঙ্কার দাম সেঞ্চুরি করে ফেলেছে।প্রতি কেজি লঙ্কা ১০০ এবং আদার দাম ১২০ টাকা হয়েছে।রসুনের দাম ৭০ থেকে ৮০ প্রতি কেজি।গরমের সব্জির তালিকায় থাকা উচ্ছে , বেগুন , পটল , ঝিঙে , ভেন্ডি , টমেটোর দাম প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা ছুঁয়েছে। এর মধ্যে পেঁপের মূল্য মহার্ঘ্য । ৮০ টাকা প্রতি কেজি । তুলনায় কাচা আম । আর কুমড়াে আর শাকের দামটাই বেশ খানিকটা কম ,২০ থেকে ২৫ টাকা প্রতি কেজির মধ্যে রয়েছে । ফণীর পর মাছের আমদানি কমে গিয়েছে ভিন রাজ্য থেকে তাই গােটা রুই কাতলার দাম আড়াইশাে থেকে সাড়ে তিনশাের মধ্যে ঘােরাফেরা করছে।পাবদা , পারশে , ভেটকি , চিংড়ির কোনও মাছের দামই প্রতি কেজি সাড়ে চারশাে ’ র নীচে নয়। এদিকে গরম পড়তে না পড়তেই এক ধাক্কায় খুব বেড়ে গিয়েছে মুরগির মাংসের দাম।কাটা মুরগির দাম ২২০ থেকে ২৫০ টাকা প্রতি কেজিতে। পাঁঠার মাংসও ৫৫০ টাকার ঘর ছুঁয়েছে বহুদিনই। একে তাে গরম,তায় আবার ঈদের জন্য দুর্মূল্য ফলের বাজার আপেল , আঙুর , বেদানা।কোনটার দামই কেজি প্রতি ২০০ টাকার নীচে নয়। এবার গরমের ফল আম এবং লিচুর যােগান যথেষ্ট কম।যা পাওয়া যাচ্ছে ,তার দাম যথেষ্ট বেশি।রমজানের ফল হিসেবে কলা , পেঁপে আর তরমুজের দামটাই তাও সাধ্যের মধ্যে রয়েছে।এবার ঈদের বাজারে প্রায় অমিল রুহ আফজা।রােজার উপবাস ভেঙে সন্ধের নমাজের পর গলা ভেজানাের জন্য এই গােলাপের গন্ধমাখা সুগন্ধী পানীয় এবারে বাজারে মিলছে না।বিকল্প পানীয় দিয়ে গলা ভেজাতে হচ্ছে তাদের।গরমে এবার প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবার রেশ রেখে গিয়েছে ঘরকন্নাতেও।
Advertisement
Advertisement



