পঞ্চায়েত নির্বাচনের অভিশপ্ত দিন ভুলে গিয়ে ভোট দিলেন পৌলমির পরিবার

২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেই ভয়ঙ্কর দিনের স্মৃতি ভুলে রবিবার ভােট দিলেন হাড়ােয়া গােপালপুরের বাসিন্দা ছােট্ট পৌলমির মা দিপালী হালদার।

Written by Rakesh Shil Kolkata | May 20, 2019 4:52 pm

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র (Photo: iStock)

২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেই ভয়ঙ্কর দিনের স্মৃতি ভুলে রবিবার ভােট দিলেন হাড়ােয়া গােপালপুরের বাসিন্দা ছােট্ট পৌলমির মা দিপালী হালদার। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সামনেই ফুল তুলতে যায় ছােট্ট পৌলমি। সেখানে বল ভেবে বাড়িতে কুড়িয়ে আনে আস্ত একটি বােমা। বাড়িতে এদৃশ্য দেখে পরিবারের সদস্যরা চিৎকার করতে থাকেন। ভয়ে বােমাটি ফেলে দেয় সে। এ ঘটনায় বােমাটি ফেটে একটি হাত হারায় সে। যদিও কৃত্রিম হাত দ্বারা এখন মােটামুটি সবকাজই করে সে।

বােমার আঘাতে হাত চলে যাওয়ার পর হাত কিনে এনে দেওয়ার সেই বায়না ব্যাকুল করেছিল সকলকেই। সে কি ফুল তুলতে পারবে না আর কোনও দিন? একথাও হৃদয়ে দাগ কেটে গিয়েছিল সকলের। যদিও মা দীপালি হালদার এদিন সকাল সকালই ভােট দিয়েছেন। সেই ভয়ঙ্কর দিনের কথা মনে পড়তেই চোখ ছলছল করে ওঠে তাঁর। সকল রাজনৈতিক দল এবং মানুষকে বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, তাঁর ছােট্ট ফুটফুটে মেয়ের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, এ ঘটনা যেন কখনও কারাের সঙ্গে না ঘটে। রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাকুক। সকলের কাছে তাঁর আবেদন, এমন কিছু কেউই করবেন না যাতে অপর মানুষ সমস্যার মধ্যে পড়েন।

গােপালপুরে ছােট্ট একটি বাড়িতে পৌলমি থাকে তার বাবা-মায়ের সঙ্গে। বাবা অসুস্থ। মায়ের উপরই সমস্ত দায়িত্ব সংসারের। সকালে বাড়িতে গিয়ে দেখা মিলল ছােট্ট পৌলমির। লেখাপড়ায় ব্যস্ত সে। কোন ক্লাস হল? এ কথার উত্তরে চটজলদি উত্তর ক্লাস ফোর হল, পড়াশােনার চাপ আছে, গরমের ছুটির কাজ করছে বলেও জানায় সে। পড়াশােনা করে মানুষের মতাে মানুষ হতে চায় বলেও জানায়। পড়াশােনা বাদে কি করতে সবচেয়ে ভালােবাসে সে? একথাতেই উত্তর ফুল তুলতে।

মা দিপালী হালদার বলেন, এবারের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ভাবেই হয়েছে তাঁদের এলাকায়। সকলেই লাইনে দাঁড়িয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভােট দিয়েছেন। যা দেখে ভালাে লেগেছে তাঁর।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে অভিশপ্ত দিনটি এসেছিল তাঁদের জীবনে তা যেন কারওর জীবনে কোনও দিন ফিরে না আসে বলে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেন বলেও জানান দিপালীদেবী।