তৃণমূল স্তরে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’

নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ইউনিসেফ-এর প্রতিনিধি সিন্থিয়া ম্যাক্‌কাফ্রে।

তৃণমূল স্তরে মানুষকে সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এবার নতুন একটি প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকল্পের নাম আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান। আগামী ২ আগস্ট থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এই প্রকল্পের আওতায় একেবারে তৃণমূল বা প্রান্তিক স্তরের মানুষের ছোটো ছোটো সমস্যার সমাধান করা হবে। মমতার দাবি, সারা দেশে এই ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম। নতুন প্রকল্পের কাজ হবে বুথভিত্তিক। সোমবার একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের সুর বেঁধে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার সরকারের সুবিধা প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিলেন তিনি।

দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে তৃণমূল সরকার। সেই প্রসঙ্গ টেনে মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে নতুন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, পাড়ায় একটা কলের দরকার হলে, অল্প রাস্তার প্রয়োজন পড়লে, কোনও একটি আইসিডিএস সেন্টার বা স্কুলের ছাদ মেরামতির প্রয়োজন হলে আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধানের মাধ্যমে মানুষ পরিষেবা পাবেন। এটি ছোটো প্রোগ্রাম। সরকারি বিভিন্ন দপ্তর, পঞ্চায়েত, কর্পোরেশনের কাজ যেমন চলছিল তেমনভাবেই চলবে। তারই মধ্যে নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে কোনও গ্রামের ছোটো ছোটো সমস্যার সমাধান পাবেন বাসিন্দারা।

এদিন মমতা জানিয়েছেন, রাজ্যে মোট ৮০ হাজার বুথ রয়েছে। তিনটি করে বুথ নিয়ে একটা কেন্দ্র (পাড়া) হবে। প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একটি স্থান নির্ধারণ করা হবে। ওই স্থানে থাকবেন সরকারি আধিকারিকরা। সেখানে এসে গ্রামের মানুষ নিজেদের সমস্যা জানাতে পারবেন। সমস্ত কাজ শেষ হবে ২ মাসের মধ্যে। মাঝে থাকবে ১৫ দিনের পুজোর ছুটি। সেক্ষেত্রে পরে সেই সময়টা অ্যাডজাস্ট করে দেওয়া হবে। গ্রামের অন্দরে তৃণমূল স্তরে গিয়ে এই প্রোগ্রামের আয়োজন হবে। এক একটি বুথের জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে দেবে সরকার। বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা সত্ত্বেও মানুষের জন্য কাজ করতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল সরকার। সেই অঙ্গীকার বাস্তবায়িত করতে আরও এক ধাপ এগোল রাজ্য। মমতা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধানের সব কাজ অনলাইন মাধ্যমে, স্বচ্ছতা মেনে হবে। মানুষ নিজেই সমস্যা জানাতে পারবেন। সেইগুলি বিবেচনা করে সমাধান করে দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের কাজ পরিচালনার জন্য রাজ্য ও জেলাস্তরে টাস্ক ফোর্স থাকবে। রাজ্যস্তরের টাস্ক ফোর্সের দায়িত্বে থাকবেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তিনিই এই কাজ দেখাশোনা করবেন। পুলিশও এই কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে।


এদিন সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই রাজ্যের একাধিক প্রকল্পের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, দুয়ারে সরকার প্রকল্পে ১০ কোটি মানুষ অংশগ্রহণ করেছে। এর ৯০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ডিসেম্বর, জানুয়ারি মাস থেকে নতুন অ্যাপ্লিকেশনগুলির সুবিধা পাবেন উপভোক্তারা। দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে জাতিগত সংশাপত্র, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী সহ একাধিক সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে থাকেন রাজ্যবাসী। মমতা ফের একবার ১০০ দিনের কাজ, গ্রামীণ আবাসের টাকা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে নিশানা করেছেন। তা সত্ত্বেও

রাজ্য ৭৫ লক্ষ জব কার্ড হোল্ডারদের কাজ দেয়েছে। কেন্দ্রের কাছে বর্তমানে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি টাকা পাওনা রয়েছে রাজ্যের। তা সত্ত্বেও বাংলার মানুষের জন্য কাজ করা হচ্ছে।