গ্রুপ ডি পদে ৫৭৩ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ

বুধবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে নজিরবিহীন নির্দেশ জারি করা হয়েছে এসএসসির গ্রুপ ডি নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে।

একাধারে একসাথে ৫৭৩ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ পাশাপাশি এইসব ঘোষিত বাতিল নিয়োগভুক্ত ব্যক্তিদের বেতন পুনরুদ্ধারের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এতে খুশি সাধারণ চাকরিপ্রার্থীরা।

এদিন গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট-এর সিঙ্গেল বেঞ্চ।


বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ, নিয়ম না মেনে যে ৫৭৩ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে তাঁদের বরখাক্ত করতে হবে।

ওই নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। একই সঙ্গে হাইকোর্ট জানিয়েছে, ‘এত দিন পর্যন্ত ওই কর্মীদের যা বেতন দেওয়া হয়েছে তা পুনরুদ্ধার করতে হবে। সেই কাজ কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা স্কুল পর্যবেক্ষকদের।

পাশাপাশি, এই ঘটনার তদন্তে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ যে কমিটি গঠন করেছিল সেই কমিটিকেও পাঁচ দিনের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে বলেছে সিঙ্গেল বেঞ্চ।

গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ-দুর্নীতি মামলায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বে তৈরি কমিটি ওই তদন্ত করছে। তাদের আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারির তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পেশের নির্দেশ আদালতের।

শুরুতে মামলাকারীদের অভিযোগ ছিল, দুর্নীতি করে ২৫ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে গ্রুপ ডি কর্মী হিসেবে। নথি খতিয়ে দেখে তাঁদের বেতন বন্ধেরও নির্দেশ দেয় আদালত।

পরবর্তী সময়ে আরও ৫০০-রও বেশি পদে অস্বচ্ছ নিয়োগের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই কর্মীদের বেতন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।

মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, ‘আদালতের পর্যবেক্ষণ–এ ক্ষেত্রে আকাশছোঁয়া দুর্নীতি হয়েছে। জনগণের টাকা থেকে এ রকম দুর্নীতি হতে পারে না। তাই বেতন ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।’

পাশাপাশি যে বেতন এখন অবধি পেয়েছেন তা উদ্ধার করার জন্য জেলা স্কুল পর্যবেক্ষককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের কমিটিকে আগামী ১৪ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ হাইকোর্টের। গত মাসেই বড় স্বক্তি পেয়েছিল নবান্ন।

গ্রুপ ডি নিয়োগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, ‘গ্রুপ ডি নিয়োগে কী অনিয়ম হয়েছে তা অনুসন্ধানের জন্য সিবিআই-কে ডাকার প্রয়োজন নেই’।

এ ব্যাপারে প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গড়ার বিষয়ে সায় দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ।

আদালত জানিয়েছিল, প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বে তৈরি করা হবে গ্রুপ-ডি নিয়োগ মামলার বিশেষ তদন্তকারী দল।

তারাই এসএসসি-র গ্রুপ ডি নিয়োগের তদন্ত করবে। দু’মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছিল হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে সিঙ্গল বেঞ্চ নিয়োগ হওয়া কর্মীদের বেতন বন্ধের যে নির্দেশ দিয়েছিল তাও খারিজ করে দিয়েছিল। আদালত বলেছিল, এভাবে হঠাৎ করে কারও বেতন বন্ধ করা যায় না।

আগামী দু’মাস যতক্ষণ না এই কমিটি রিপোর্ট জমা দিচ্ছে ততদিন নিয়োগ হওয়া কর্মীরা কাজ করবেন এবং তাঁদের বেতনও দিতে হবে।