দুর্যোগ-দুর্ভোগের দিনরাত্রি এক কোটি মানুষ প্রভাবিত, প্রাণ গেল একজনের

দিঘার চিত্র (ছবিঃএসএনএস)

ইয়াসের তাণ্ডবে রাজ্যে প্রাণ কাড়ল এক ব্যক্তির। মৃতের নাম কানাই গিরি ( ৪৫ )। জলােচ্ছাসে আহত হন আরও একজন। আপাতত তাঁকে দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্যোগে রাজ্যের প্রায় এক কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩ লক্ষের মতাে বাড়িঘর, ১৩৪ টির মতাে বাঁধ ভাঙার খবর পাওয়া গিয়েছে।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জেলা শাসক পূর্ণেন্দু মাঝি জানান, কানাই গিরিকে মঙ্গলবার স্থানীয় একটি ত্রাণকেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বুধবার তিনি জাল সংগ্রহ করতে বেরিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। সেখানে গিয়েই এই দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন তিনি।

জেলাশাসক আরও জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার ২৫ টি ব্লক। খেজুরি, রামনগর ২, নন্দীগ্রাম, নন্দকুমার, মহিষাদলে ঝড়ের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে ভেঙে পড়া গাছ সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করা হয়েছে ইতিমধ্যেই।


প্রসঙ্গত, সমুদ্রের প্রবল জলােচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়েছে দিঘার বিস্তীর্ণ এলাকা। উত্তাল সমুদ্রের জল গার্ড ওয়াল টপকে ঢুকছে রাস্তায়। প্লাবিত মন্দারমনি, তাজপুরও। রাস্তা টপকে হােটেলেও ঢুকেছে জল। ডুবে গিয়েছে সমুদ্র সংলগ্ন দোকানগুলিও। সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা সম্পূর্ণ খালি করতে কোমরবেঁধে নেমেছে প্রশাসন। সেনা নামিয়ে চলছে উদ্ধার কাজ।

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর দাপটে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন, মােহনপুর, নারায়ণগড়, সবং, মেদিনীপুর সদর ব্লকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই চলছে ঝড়াে হাওয়া ও বৃষ্টি। বুধবার দাঁতন, মেদিনীপুর সদর ব্লক, শালবনি, মােহনপুর, পিংলা, গুড় গুড়িপাল, মেদিনীপুর শহরে বেশ কিছু গাছ ভেঙে পড়ে। গাছ পড়ে গাড়ি ও বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। কিছু এলাকায় টিনের চালা উড়ে গেছে।

ইতিমধ্যে জেলার আড়াই লক্ষ মানুষকে উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে। জেলা জুড়ে ১১ হাজার ত্রাণ শিরি খােলা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়। বুধবার বিকেলে সবং এর নওগাঁ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিবেকানন্দ হাই স্কুল, দাদরা গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদকুড়ি হাই স্কুলl, বসন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝড়েশ্বর বানীভবন, বেনেদীঘি হাই স্কুলের ত্রাণ শিবিরে যান রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী মানস ভুইয়া, কর্মাধক্ষ্য আবু কালাম বক্স, প্রাক্তন বিধায়ক গীতা রানী ভুইয়া।

সেখানে থাকা দুর্গত মানুষের হাতে খাবার, ওষুধ, পানীয় জল, পােশাক, শিশু খাবার, মাস্ক, স্যানিটাইজার তুলে দেন রাজ্যের জল সম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী আক্তার মানস ভূঁইয়া। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জেলাশাসক রেশমী।

কমল বলেন ঝড়ে বেশকিছু মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনাে সঠিকভাবে জানা যায়নি। যারা ত্রাণশিবিরে রয়েছেন বুধবার রাতেও তারা ত্রাণশিবিরে থাকবেন। তাদের থাকা খাওয়ার প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

কোথাও কোনাে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। রাস্তায় ভেঙে পড়া গাছ গুলি রাস্তা থেকে সরানাের কাজ শুরু হয়েছে। ঝড় মােকাবিলার জন্য প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং গােটা পরিস্থিতির উপর জেলা প্রশাসন নজর রাখছে বলে তিনি জানান।