বাংলায় এনআরসি করতে দেওয়া হবে না, বাম-কংগ্রেসকে একসঙ্গে আন্দোলনের ডাক মমতার

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (File Photo: IANS)

রাজ্যে কোনও অবস্থাতেই নাগরিকপঞ্জি কার্যকর করতে দেওয়া হবে না। বাংলায় এনআরসি অভিসন্ধির পিছনে কেন্দ্রের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা রয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার চেষ্টা হলে সকলে মিলে একজোট হয়ে প্রতিবাদ হবে। শুক্রবার রাজ্য বিধানসভায় এনআরসি নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এভাবেই সােচ্চার হতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে।

এনআরসি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বাম-কংগ্রেসকে একসঙ্গে লড়াই করার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিরােধী এই দুটি দলের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, বাংলাকে ওরা রাররই ভয় করে। আসুন আমরা সকলে একসঙ্গে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করি। অন্য কেউ প্রতিবাদ না করলেও সকলে যখন ভয় পাচ্ছে, তখন আন্দোলন করে আমাদেরকে সকলকে পথ দেখাতে হবে।

এনআরসি নিয়ে শুক্রবার সর্বদলসম্মত হয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রস্তাব এনে সােচ্চার হয়ে বক্তব্য রাখেন বাম এবং কংগ্রেস বিধায়করা। বিজেপির বিধায়করা অবশ্য আলােচনায় অংশগ্রহণ করে প্রতিবাদ জানান। প্রতিবাদে তারা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য না শুনে বেরিয়ে যান। মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের নাম না করে বলেন, কেন্দ্র রাশিয়া, আমেরিকাকে ম্যানেজ করে ফেলেছে। দেশ ইসরাইলকেও বিক্রি করে দিচ্ছে। কিন্তু বাংলাকে কোনও অবস্থায় ম্যানেজ করা যাবে না।


মুখ্যমন্ত্রী জানান, এনআরসি চালু করার পিছনে অনেক উদ্দেশ্য রয়েছে কেন্দ্রের। দেশের ভয়াবহ অর্থনীতির দিক থেকে সাধারণ মানুয়ের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দিতে তারা এইসব কাজ করছে।

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ চালিয়ে মমতা বলেন, বাংলার মানুষকে ওরা বরাবরই ভয় পায়। কেউ ওদের বক্তব্যের প্রতিবাদ করতে পারে না। প্রতিবাদ করলেই হুমকি। তবে হুমকি দিয়ে বাংলাকে দখল করা অত সস্তা হবে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে হেনস্থা করা নিয়ে জোরালাে প্রতিবাদ করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। সিবিআইয়ের গ্রেফতারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, কারাে বিরুদ্ধে কোনও অভিযােগ থাকতেই পারে। তিনি দীর্ঘদিন কেন্দ্রে অর্থমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, এনআরসির তালিকা থেকে বহু ভারতীয়ের নাম বাদ পড়েছে। আমার বলছি, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছেড়ে এবার আপনারা অর্থনীতির দিকে মন দিন। দেশে অর্থনীতির অবস্থা খারাপ। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকেও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে। গণতন্ত্রের স্তম্ভগুলিকে বিনষ্ট করা চেষ্টা হচ্ছে। এখন দেশের গণতন্ত্রের স্তম্ভগুলিকে নষ্ট করার চেষ্টা চলছে।

এনআরসি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নীতিশ কুমার জানিয়েছেন, বিহারে কোনও অবস্থাতেই এনআরসি কার্যকর করতে দেওয়া হবে না। আমরাও এ রাজ্যে এনআরসি হতে দেব না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এদিন এনআরসি বিরােধী প্রস্তাব আনেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কেন্দ্রের এই এনআরসিকে অমানবিক বলে কটাক্ষ করেন। এই অমানবিক এনআরসির এই রাজ্যে কোনও প্রয়ােজন নেই বলে মন্তব্য করেন পুরমন্ত্রী।