ত্রাণ নয়, দুই সরকারের চোখই নির্বাচনের দিকে : সোমেন মিত্র

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। (Photo: IANS)

আম্ফান, করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিসহ একাধিক বিষয় নিয়ে দিল্লির মোদি সরকার এবং রাজ্যের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে রীতিমতো তুলোধনা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র । আজ কংগ্রেসের রাজ্য দফতর বিধানভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে সোমেনবাবু বলেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং রাজ্যের টিএমসি সরকারের করোনা অতিমারী এবং আম্ফান পরবর্তী সময়ে নগ্ন রাজনীতি সারা দেশের গরিব মানুরে খাদের কিনারায় নিয়ে এসেছে।

দুই সরকারের পাখির চোখ এখন ২০২১’র বিধানসভা নির্বাচন। দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই কঠিন পরিস্থিতিতে কোথায় দেশের মানুষকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করবেন, সেই সময় তিনি আগামী বিধানসভা ৰ্বিাচনে এই রাজ্যে বিজেপির ক্ষমতায় আসার গল্প শোনাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, দেশে কোভিড ভাইরাস আক্রমণের শুরুর দিকে কংগ্রেস নেতা সংসদে এই ভাইরাসের গুরুত্ব সম্পর্কে সরকারকে সতর্ক করার চেষ্টা করেছিলেন। অথচ দেশের প্রধানমন্ত্রীসহ গোটা সরকার সে সময় ব্যস্ত ছিলেন মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের সরকার ভাঙতে। আর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাস্তায় রাস্তায় গোল গোল দাগ কেটে বেড়াচ্ছিলেন।


সোমেন মিত্র’র অভিযোগ, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলে দিলেন, আমরা করোনার বিষয়ে আমেরিকার থেকে ভালো জায়গায় আছি। কিন্তু তিনি এটা বললেন না যে ভারতে কজন কোভিড রোগীর পরীক্ষা হয়েছে আর আমেরিকায় ক’জনের পরীক্ষা হয়েছে।

কংগ্রেস প্রদেশ সভাপতি আরও অভিযোগ করেন, ভিন রাজ্য থেকে শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পরিকল্পনা এবং আন্তরিকতা কোনওটাই ছিল না কোনও সরকারের। কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধি শ্রমিক স্পেশালের ভাড়া কংগ্রেস দিয়ে দেবে বলার পরেই দুই সরকারের টনক নড়ে। পরিযায়ী শ্রমিকরা সর্বস্ব খুইয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন। তাই কংগ্রেসের দাবি, তাদের ব্যাঙ্কে এখনই ১০ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে ৭৫০০ টাকা অন্তত আগামী ছ’মাস পাঠানো হোক।

রাজ্যে ত্রাণ বন্টনে দলবাজি নিয়েও সরহ হয়েছেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান এই নেতা। তিনি বলেন, এই রাজ্যে ত্রাণে দলবাজি ছিলই। এখন বিরোধী দল ত্রাণ দিতে গেলে তাদের আক্রমণ করা হচ্ছে। গত রবিবার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী হাওড়ার শ্যামপুরে যান। তাঁরা সেখান থেকে ফিরে আসার পরেই বাম ও কংগ্রেস কর্মীদের আক্রমণ করে রক্তাক্ত করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতেও একাধিক জেলায় ত্রাণ বন্টনের সময় বিরোধী কর্মীদের ওপর আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়েছে।

এর পাশাপাশি রাজ্যে সংবাদমাধ্যমের ওপর যেভাবে সরকারের ফরমানের আঘাত আসছে, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সোমেন মিত্র। তিনি বলেন হরবখত যিনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের অভিযোগ তোলেন, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যেই সংবাদপত্রের সম্পাদককে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জেরা করা হয়।