গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়: মমতা

বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের সূচনায় রাজ্যপালের ভাষণ নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড সৃষ্টি হয়। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবন যাওয়ার সময় অধিবেশন কক্ষের বাইরে বলেন বিজেপি আজ যা করেছে সেটা গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার ।

এই ঘটনা অভূতপূর্ব, দুর্ভাগ্যজনক, বেনজির। এটি গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়। বিরোধী বিধায়করা স্লোগান দেন, সাউটিং করেন কিন্তু এরকম ঘটনা আগের বিধানসভায় ঘটেনি।

এর আগে রাজ্যপালের ভাষণ কখনও বন্ধ হয়নি। এটা অসাংবিধানিক। আমরা বারবার হাতজোড় করে অনুরোধ করছিলাম ওনাকে ভাষণ পড়ার জন্য।


কিন্তু ওনার কোনও পড়ার ইচ্ছা ছিল না মনে হয় ওনার ওপর চাপ ছিল বিজেপির এটা পূর্বপরিকল্পিত বলেই আমরা মনে করি। ইচ্ছে করে সাংবিধানিক সংকট তৈরির চেষ্টা করছিল।

আমি বারবার অনুরোধ করেছিলাম যে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা যাতে না করা হয়। হেরে গিয়েও বিজেপির কোনও লজ্জা নেই। একটা ওয়ার্ডেও জিততে পারে না।

আমি অত্যন্ত দুঃখিত এবং মর্মাহত। যদি উনি না পড়ে চলে যেতেন, তাহলে সাংবিধানিক সংকট হত।

যাইহোক অবশেষে তিনি পেশ করে দিয়ে গেছেন তাই কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। আমরাও তো এর আগে রাষ্ট্রপতির ভাষণে কত সুন্দরভাবে অংশগ্রহণ করতাম। বিজেপি বিধায়করা হেরে গিয়ে নাটক করছেন।

পরবর্তীকালে বিধানসভার প্রেস কর্নারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন এই রাজ্যপালের ভাষণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত।

তাই আমরা এর তীব্রভাবে প্রতিবাদ করি। রাজ্যপালকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

যারা বাইরে ভোট লুঠ করে তারাই বিধানসভায় রাজ্যপালকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। স্লোগানে আমাকে অশালীন ভাষায় আক্রমণও করা হচ্ছিল। আমাদের মহিলা বিধায়কদের ধাক্কাধাক্কিও করা হয়।

মুখ্যমন্ত্রীর উসকানিতে তৃণমূলের মহিলা বিধায়করা সাংবিধানিক প্রধানকে হেনস্থা ও নিগ্রহ করেন। এটা নজিরবিহীন। লজ্জার।

এই ঘটনার প্রতিবাদে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে পায়ে হেঁটে বিধানসভা থেকে রাজভবন যান অভিযোগ জানাতে।

পরে এক অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, এদিন বিধানসভায় যা হল তা গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়। ট্রেজারি বেঞ্চের বিধায়করা এরকম করবেন, তা কখনও ভাবিনি।

আমাকে তারা শারীরিকভাবে নিগ্রহ করে এটা কোনও ছোট ব্যাপার নয়। এটা বড় ব্যাপার। মার্শালকে থামাতে বলেছিলাম। তিনি কর্ণপাত করেননি।

মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, রাজ্যপাল ধনকড় নয় ঢঙকর। পুরো নাটকের চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন ধনকর। বিরোধীদের সুযোগ করে দিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী বারবার হাতজোড় করে অনুরোধ করেছেন, যেটা বিধানসভায় দৃষ্টান্ত। বিরোধী দলনেতার তাঁর দলের বিধায়কদের উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।

রাজ্যপালকে নিগ্রহ করা প্রসঙ্গে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা সবৈর মিথ্যা। আপনারা তো ছিলেন। আপনারা সবই দেখেছেন