অতিরিক্ত শূন্যপদে কোনও নিয়োগ নয়

ফাইল চিত্র

উচ্চ প্রাথমিকে অতিরিক্ত শূন্যপদ বাতিল করল কলকাতা হাইকোর্ট। ২০২২ সালে উচ্চ প্রাথমিকে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল রাজ্য। বৃহস্পতিবার আদালতে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর ডিভিশন বেঞ্চে সেই বিজ্ঞপ্তি খারিজের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিন বিচারপতির পর্যবেক্ষণ নিয়মিত নিয়োগের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা যায় না। সেক্ষেত্রে রাজ্যের তৈরি করা শূন্যপদে কোনও নিয়োগ করা যাবে না। বুধবারেই কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্যের ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বহাল থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের এই নির্দেশে স্বস্তি পেয়েছিল রাজ্য। এই নির্দেশের ২৪ ঘণ্টা হতে না হতে আদালতের তরফে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেওয়া হল।
২০১৬ সালে উচ্চ প্রাথমিকের শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষায় যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত শূন্যপদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। এরপর ২০২২ সালে ১৬০০টি শূন্যপদ তৈরি করে রাজ্য। যার মধ্যে ৮৫০টি শারীরশিক্ষায় ও ৭৫০টি  কর্মশিক্ষায় শূন্যপদের ব্যবস্থা করা হয়। এরপরে সেই অতিরিক্ত শূন্যপদে নিয়োগের জন্য রাজ্যের তরফে বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়। ২০২২ সালের ১৯ মে ও ১৪ অক্টোবর দিন দুটিতে রাজ্যের তরফে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের তরফে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে মামলা দায়ের করা হয়।
অভিযোগ তোলা হয়, রাজ্য দুর্নীতিগ্রস্ত চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি খারিজ করে দেওয়া হয়। আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, উচ্চ প্রাথমিকের এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী জানুয়ারি মাসে। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে বিচারপতি বসুর পর্যবেক্ষণ,  ‘২০১৯ সালে প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর তৈরি করা হয়েছে এই অতিরিক্ত শূন্যপদ। সেই কারণে এই পদগুলি বৈধ নয়। মৃত প্যানেলকে ইঞ্জেকশন দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে।’ সেই কারণে আদালতের নির্দেশ অতিরিক্ত শূন্যপদে কোনও নিয়োগ করা যাবে না।
উলেখ্য, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে এই অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। গত এপ্রিল মাসে সেই নির্দেশ দেখিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করে রাজ্য। রাজ্যের বক্তব্য ছিল, উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অতিরিক্ত শূন্যপদে নিয়োগের অনুমতি দিক আদালত। তবে গত ৭ মে আদালত এই অতিরিক্ত শূন্যপদের উপর স্থগিতাদেশ বহাল রাখে বিচারপতি বসুর একক বেঞ্চ। তারপর বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বিচারপতি সৌমেন বসু ও বিচারপতি স্মিতা দে-র ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। ডিভিশন বেঞ্চও একক বেঞ্চের নির্দেশে কোনও প্রকার হস্তক্ষেপ করা হয় না। বৃহস্পতিবার এই মামলায় রায় দেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের নির্দেশে রাজ্যের অতিরিক্ত শূন্যপদে নিয়োগের আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয়।