রাজ্যে নিম্নচাপের জেরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজ্যবাসীকে আগাম সতর্কতা মুখ্যমন্ত্রীর

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

নিম্নচাপ শক্তি বাড়াতেই রাজ্যে ফের ঘনিয়ে আসছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ঝড়ের সঙ্গে রয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাসও। এমন পরিস্থিতিকে কীভাবে সামলানো হবে, তা নিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্নে জরুরি বৈঠক সেরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে মুখ্যসচিব, বিপর্যয় মোকাবিলা দল, প্রশাসনের অন্যান্য আধিকারিকদের নিয়ে সেই বৈঠকে দুর্যোগ সামলাতে একাধিক পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরপরই সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য সরকার এই বিপর্যয় মোকাবিলায় কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে এবং রাজ্যবাসীর প্রতি কী কী সতর্কবার্তা রয়েছে তাঁর বিস্তারিত জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তিনি রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। বিপর্যয় মোকাবিলায় সবরকমভাবে প্রস্তুত প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নবান্নের এই সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘আবহাওয়া নিয়ে একটা আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টি হবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। ইতিমধ্যে উপকূলে বৃষ্টি হচ্ছে। নিচু এলাকা থেকে লোকজনকে সরানোর কাজ চলছে। উপকূলে বাড়তি সতর্কতাও জারি হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে। যাঁরা সমুদ্রে স্নান করতে যাবেন, দুর্যোগের পরিবেশ থাকায় তাঁদের উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকদের সতর্ক করা হয়েছে, যাতে কোনও বিপর্যয় এলে সঙ্গে সঙ্গে দুর্গতদের ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়। জেলায় জেলায় আমাদের ত্রাণ প্রস্তুত রয়েছে। কারও কোনও অসুবিধা হবে না।’

জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকেই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে। যদিও বৃহস্পতিবার বেলা বাড়তেই জেলায় জেলায় তার প্রভাব পড়েছে। কলকাতাতেও টানা বৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে ভারী বৃষ্টিতে ও সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার গোবর্ধনপুরের পশ্চিমে ৬০০ মিটার তৈরি মাটির বাঁধ ভেঙে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫টি বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। জলমগ্ন হয়েছে চাষের জমিও। পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর কুমার জানা জানিয়েছেন, রিং বাঁধ তৈরির জন্য সেই বাঁধের আগে পূর্বদিকে ৩০০ মিটার ও পশ্চিমদিকে ৬০০ মিটার মাটির নদীবাঁধ তৈরি হয়েছিল। সেই বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছে।


প্রসঙ্গত আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস, বঙ্গোপসাগরের শক্তিশালী নিম্নচাপের জেরে বৃহস্পতি ও শুক্রবার প্রবল বৃষ্টিতে ভিজবে দক্ষিণ বঙ্গের প্রায় সব জেলা। বেশ কিছু জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির সর্তকতা রয়েছে। নিম্নচাপের জেরে উত্তাল থাকবে সমুদ্রও। সেজন্য মৎস্যজীবীদের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, আগামী ৪৮ ঘণ্টা দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে। তা মোকাবিলায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আগাম সতর্কতা নেওয়া হয়েছে উপকূলীয় এলাকায়। জলমগ্ন ও বিপদগ্রস্ত মানুষজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীও তেমনটাই জানালেন।