রাজ্যের বাসিন্দাদের কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার নির্দেশ নবান্নর

মঙ্গলবার রাজোর স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে জানিয়েছেন এই রাজ্য থেকে দিল্লির তবলিগ জামাতে যাওয়া প্রত্যেককে চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে।

Written by SNS Kolkata | April 1, 2020 6:03 pm

নিজামুদ্দিনের জমায়েতে অংশ নেওয়া মানুষদের স্বাস্থপরীক্ষা চলছে। (Photo: AFP)

দিল্লির নিজামুদ্দিনের ধর্মীয় সভায় যোগ দেওয়া করোনা আক্রান্ত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে তেলেঙ্গানায়। এরপরই দুশ্চিন্তা বাড়ল রাজ্য সরকারের। খোঁজ নিয়ে নবান্ন জেনেছে, দিল্লির ওই ধর্মীয় জমায়েতে এই রাজ্যেরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। ইতিমধ্যে তাদের অনেকে আবার এই রাজ্যে ফিরেও এসেছেন।

মঙ্গলবার রাজোর স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে জানিয়েছেন এই রাজ্য থেকে দিল্লির তবলিগ জামাতে যাওয়া প্রত্যেককে চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষার পাশাপাশি ১৪ দিনের জন্য বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে। তবে এই ঘটনায় ঠিক কতজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেই সংখ্যা প্রকাশ করতে চায়নি রাজ্য সরকার।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সুত্রে জানানো হয়েছে, তারা একটি তালিকা তৈরি করে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্যকে পাঠিয়েছে। দেশের মধ্যে দশটিরও বেশি রাজ্য থেকে লোকজন ১ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত হওয়া ওই সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন।

এর মধ্যে কেরল, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানার দক্ষিণী রাজ্য ছাড়াও অসম, পশ্চিমবঙ্গের মানুষও গিয়েছিলেন। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, বাংলাদেশ, কিরগিজস্তানের বাসিন্দারাও এসেছিলেন। তাদের অনেকেই আবার যাতায়াতের পথ হিসেবে এই কলকাতা শহরকে ব্যবহার করেছিলেন।

ওই জমায়েতে যারা গিয়েছিলেন এবং তাদের সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন তাদের অনেককে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রায় দু’হাজার জনকে কোয়ারেন্টাইন করে নিজামুদ্দিন মসজিদের ছ’তলা ডরমেটরিতে রাখা হয়েছে। এঁদের মধ্যে ২৮০ জন আবার বিদেশি নাগরিক বলে জানা গিয়েছে।

কোয়ারেন্টাইনে থাকা বহু মানুষের মধ্যে করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে। এই সংবাদ শুনে নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য দফতর এক কর্তা বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ওই ধর্মীয় সভায় যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের সংস্পর্শে এসেছেন অনেকে। তাদের মধ্যে এই রাজ্যেরও অনেকে ছিলেন।

স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, সব সময় করোনা উপসর্গ সঙ্গে সঙ্গে প্রকাশ পায় না। আবার অনেকসময় করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি নিজে না আক্রান্ত হলেও তার কাছ থেকে অন্যদের কাছে সংক্রমণ ছড়িয়ে যেতে পারে। ফলে এই সংক্রমণ ধারা মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। ফলে প্রাথমিক কাজ হল নিজামুদ্দিনের ওই ধর্মীয় জমায়েতে যোগদানকারীদের চিহ্নিতকরণ।

রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছে প্রাথমিকভাবে ৭৩ জনের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। পুলিশ কর্তার দাবি, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর চব্বিশ পরগণার বেশ কয়েকজন দিল্লির নিজামুদ্দিনের জমায়েতে গিয়েছিলেন। রাজ্যের বেশ কিছু থানাকে ওই যোগদানকারীদের খুঁজে বের করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যোগাযোগ করা হচ্ছে ধর্মীয় সংগঠনগুলির সঙ্গেও যারা ওই তবলিগ যাত্রার আয়োজন করেছিল। তাদের তরফ থেকে অবশ্য সোস্যাল মিডিয়া গ্রুপে একটি ভিডিও প্রকাশ করে বলা হয়েছে কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গ থেকে যোগদানকারীদের অনেকেই এখন রয়েছেন দিল্লিতে।