• facebook
  • twitter
Sunday, 14 December, 2025

পশ্চিম মেদিনীপুরে এইডস আক্রান্ত ১০০-র বেশি

স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত অর্থাৎ গত সাত মাসে ৩২ হাজার ৪৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়

প্রতিবছর ১লা ডিসেম্বর দিনটিতে বিশ্বজুড়ে পালিত হয় বিশ্ব এইডস দিবস।  ১৯৮৮ সালে এই দিনটি প্রথম পালন করা হয়। এইডস দিবসে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের দেওয়া পরিসংখ্যান উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে শুধুমাত্র পশ্চিম মেদিনীপুরে গত সাত মাসে এইডসে আক্রান্তের সংখ্যা শতাধিক। ঘাটাল, মেদিনীপুর, খড়্গপুরে এই রোগের প্রভাব বেশি বলে জানা গিয়েছে। আক্রান্তের মধ্যে রয়েছে গর্ভবর্তীরাও। ফলে আগের থেকে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও জেলার এই অবস্থা নিয়ে চিন্তায় স্বাস্থ্য দপ্তর।

স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত অর্থাৎ গত সাত মাসে ৩২ হাজার ৪৫৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তার মধ্যে ১০৬ জনের শরীরে এইচআইভি পজিটিভ জীবাণু পাওয়া যায়। প্রায় সকলেই এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন। এই সময়ে ৪ হাজার ৭২০ জন গর্ভবতীর রক্ত পরীক্ষা করা হয়। যার মধ্যে ১৩ জনের নমুনায় এইচআইভি পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। এমনকি ৬ জন গর্ভবতী সিফিলিসেরও শিকার হয়েছেন।

Advertisement

২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ডেবরায় ১৬, ঘাটালে ২৪, খড়গপুরে ২৮ এবং মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৭৩ জনের রক্তের নমুনায় এইচআইভি পজিটিভ জীবাণু ধরা পড়ে। এবছর অক্টোবর পর্যন্ত সেই সংখ্যা যথাক্রমে ডেবরায় ৫, ঘাটালে ১৮, খড়গপুরে ১৫ ও মেদিনীপুরে ৩৫। এই বিষয় নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশংকর সারেঙ্গী বলেছেন, ‘চিহ্নিত এইডস রোগীদের প্রায় সকলকেই চিকিৎসার আওতায় আনা হয়েছে। নিয়মিত তাঁদের চিকিৎসা চলছে।

Advertisement

এইডস রোগ নিয়ন্ত্রণে বছরভর সচেতনতা শিবির থেকে শুরু করে নানা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।’ এই বিষয়ে আরও বেশি করে উদ্যোগ নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি। এইডস প্রতিরোধে ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এগিয়ে এসেছে সম্পূর্ণা, স্পর্শ, অগ্রগামী মহিলা ও শিশু মঙ্গল সমিতির মতো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি। তারাও স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন জায়গায় শিবির করে জনগণকে সচেতন করে চলেছে।

সাধারণত এইডস রোগের কারণ হল, এইচআইভি ভাইরাসের সংক্রমণ। ভাইরাসটি মূলত রক্ত, যৌন মিলন, অসুরক্ষিত সুচ বা সিরিঞ্জ ব্যবহারের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে এবং ধীরে ধীরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে। অনেকেই মনে করেন এইচআইভি আক্রান্ত মানেই মৃত্যু। কিন্তু, বাস্তবে তা নয়। একসময় ঘাটাল মহকুমায় এইডস রোগে আক্রান্তের সংখ্যা সবথেকে বেশি ছিল।

মূলত এর কারণ হিসেবে সেখানকার পরিযায়ী শ্রমিকদের দায়ী করা হত। সোনা, রূপো ও জড়ির কাজের জন্য দিল্লিতে যেতেন প্রচুর সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক। অভিযোগ রাজ্যের বাইরে বহুদিন থাকার পরে বিভিন্ন কারণে তাঁদের দেহে এই এইচআইভির জীবাণু বাসা বাঁধত। আর তা থেকেই এইডস রোগে আক্রান্ত হত ঘাটালের বহু মানুষ। বর্তমানে সেই সংখ্যাটা অনেক কমে এসেছে। কিন্তু সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে।

Advertisement