• facebook
  • twitter
Wednesday, 26 March, 2025

রেকর্ড গড়ল দুয়ারে সরকার, হাজির এক কোটিরও বেশি মানুষ, উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী

শনিবার শেষ হয় রাজ্য সরকারের নবম পর্যায়ের দুয়ারে সরকার। এই পর্যায়ে মোট এক কোটির বেশি মানুষ হাজির হন বিভিন্ন ক্যাম্পে।

নতুন রেকর্ড গড়ল দুয়ারে সরকার। শনিবার শেষ হয় রাজ্য সরকারের নবম পর্যায়ের দুয়ারে সরকার। এই পর্যায়ে মোট এক কোটির বেশি মানুষ হাজির হন বিভিন্ন ক্যাম্পে। ৭৬ লক্ষের বেশি মানুষ আবেদন করেছেন ৩৭টি প্রকল্পে। সোশাল মিডিয়ায় এই তথ্য জানিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুয়ারে সরকারকে সাফল্যমন্ডিত করে তোলার জন্য রাজ্যবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। এবার প্রতি সেকেন্ডে দুয়ারে সরকারের শিবিরে নাম লিখিয়েছেন ১১ জন মানুষ।

সোশাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, দুয়ারে সরকার – সরকারের আপনার দোরগোড়ায়-এর নবম পর্বে আয়োজিত ক্যাম্পে ১ কোটি ৭ লক্ষের বেশি মানুষ এসেছেন। ১ লক্ষ ৫ হাজার ক্যাম্পে মানুষ বিভিন্ন পরিষেবা নিয়েছেন। আমরা মোট ৭৬ লক্ষ আবেদন পত্র পেয়েছি। এর মধ্যে ৫০ শতাংশ আবেদন ইতিমধ্যেই প্রসেসিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে।। ২৮ ফেব্রুয়ারির সমস্ত আবেদনের প্রসেসিংয়ের কাজ সম্পন্ন হবে। সেই জন্য জোরকদমে কাজ করছেন আমাদের আধিকারিকেরা।

দুয়ারে সরকার শিবিরের সঙ্গে যুক্ত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, আমি সমস্ত সরকারী আধিকারিক, কর্মী, স্বনির্ভর গোষ্ঠী সদস্য, কন্যাশ্রী অংশগ্রহণকারী, শিক্ষার্থী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই, যাঁরা এই পর্বটিকে সফল করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। সর্বোপরি দুয়ারে সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন ও অংশগ্রহণের জন্য আমি রাজ্যবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ।

রাজ্য সরকারের শ্রম দফতরের সামাজিক সুরক্ষা যোজনা প্রকল্পে সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে। এছাড়াও, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে কয়েক লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। সূত্রের খবর, ৩ লক্ষেরও বেশি মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে নাম তুলতে আবেদন জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই রাজ্যে এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন ২ কোটি ২১ লক্ষ মহিলা। এর পাশাপাশি পাহাড়ে এবার অন্যান্য বারের চেয়ে লক্ষ্মী ভাণ্ডারে বেশি আবেদন জমা পড়েছে। সেই সংখ্যাটা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।

অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য রাজ্যের বিনামূল্যের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে ৩৭ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মস্তিষ্কপ্রসূত প্রকল্প স্বাস্থ্য সাথীতে আবেদন জমা পড়েছে ২ লক্ষের বেশি। ১ লক্ষের বেশি মানুষ বার্ধক্য ভাতার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। কন্যাশ্রী থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার কিংবা স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের পরিষেবা পেতে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পগুলিতে উপচে পড়েছে ভিড়। এবারও দুয়ারে সরকারে ভ্রাম্যমাণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সংখ্যাটা হল ৬৭ শতাংশ। এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষের কাছে সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

এবারের দুয়ারে সরকারের কার্যক্রম হচ্ছে দুটি ধাপে। প্রথম ধাপে হবে আবেদন গ্রহণ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ২৪ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রথম দফায় চলে আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া। এরপর ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরাসরি পরিষেবা প্রদানের কার্যক্রম চলবে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। রাজ্যের সব জেলাতেই ক্যাম্প করে স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, খাদ্যসাথী, কন্যাশ্রী-সহ ৩৭টি সরকারি পরিষেবা দেওয়া হয়েছে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প থেকে।

দুয়ারে সরকার প্রকল্পের পথচলা শুরু ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্যে ৭ লক্ষ ৭৫ হাজার ৪৩টি দুয়ারে সরকার ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়েছে। আর সেখান থেকে সরাসরি সরকারি সুবিধা পেয়েছেন ১২ কোটির বেশি মানুষ। নবান্ন সূত্রে খবর, নবম পর্যায়ে ৭৬ লক্ষের বেশি মানুষ আবেদন করেছেন ৩৭টি প্রকল্পে। সরকারি নিয়ম মেনে আবেদন যাচাই করা হবে। ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সমস্ত আবেদনের ভিত্তিতে পরিষেবা প্রদান নিশ্চিত করতে চাইছে সরকার।