রাজনীতি করছেন মোদি তাই বৈঠকে যাইনি : মমতা

মুখ্যমন্ত্রীকে এড়িয়ে রাজ্যপালকে দিয়ে ফণীর ক্ষয়ক্ষতির তদারকি করিয়েছে কেন্দ্র। এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামােয় আঘাত বলে আগেই অভিযােগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Written by SNS West Midnapore | May 7, 2019 10:49 am

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Photo: IANS)

মুখ্যমন্ত্রীকে এড়িয়ে রাজ্যপালকে দিয়ে ফণীর ক্ষয়ক্ষতির তদারকি করিয়েছে কেন্দ্র। এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামােয় আঘাত বলে আগেই অভিযােগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

সােমবার তমলুক ও ঝাড়গ্রামে নির্বাচনী সভা করতে এসে রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে কলাইকুণ্ডায় বায়ু সেনা ঘাঁটিতে সভা করতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তাঁর সেই কৌশল আবার ধাক্কা খেল।

সােমবার ঝাড়গ্রাম লােকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বীরবাহা সরেনের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তাঁকেই বাদ দিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব সহ কিছু আমলাকে নিয়ে মিটিং করতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এবিষয়ে গতকালই একটি চিঠি পাঠানাে হয় রাজ্যকে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন চড়া সুরে বলেন, ওর এতাে সাহস হয় কি করে? মুখ্যমন্ত্রীকে বাদ দিয়েই মিটিং। একটা চিঠি পাঠিয়ে বলেছিলেন ফণীর ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কথা বলবেন। উনি ভােট প্রচারে এসেছেন। প্রচারের জায়গায় কেন কথা বলবাে? কেন কলাইকুণ্ডায় বৈঠক বসবে? এটাও যে মােদির একটা রাজনৈতিক চমক তা জানিয়ে মমতা বলেন, নির্বাচনের আগে বৈঠকের নাম রাজনীতি করতে এসেছেন। কেন ভােটের প্রচারে এসে সরকারি বৈঠক করবেন? সরকারি বৈঠক করতে আসেননি মােদি, ভােটের প্রচার করতে এসেছেন।

ওড়িশায় গিয়ে সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। যদিও সেখানে নির্বাচন মিটে গেছে। এবিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাকে যখন ফোন করা হয়েছিল তখন কলকাতায় ছিলাম না। দুর্যোগের কেন্দ্রে খড়গপুরে ছিলাম যাতে বড় কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম যেতে পারি।

ভােট প্রচারে না এলে ওনার সঙ্গে বৈঠকের জন্য ভাবতাম। ভােটের সময় ওর সঙ্গে বৈঠক চাই না। মােদির সঙ্গে একমঞ্চে থাকব না। নতুন প্রধানমন্ত্রী এলে তাঁর সঙ্গে কথা বলবাে।

তমলুকের সভায় মােদি বলেছেন, দিদি সবকিছু নিয়ে রাজনীতি করেন। এর উত্তরে মুখ্যমন্ত্রীর জবাব, নির্বাচনের আগে রাজনীতি করতে পরিকল্পনামাফিক এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কেন কলাইকুণ্ডায় যাব? আমাদের কি চাকর-বাকর ভাবেন? আমি সবেতেই রাজনীতি করি? আমি যা করি তার নখের যােগ্য করতে পারবেন? ঝড়ে রাজ্যে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা সামাল দেওয়ার ক্ষমতা রাজ্যের আছে। এজন্য কারাের কাছে ভিক্ষে চাওয়ার দরকার নেই বলে দাবি করে মােদিকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপনি দেবেন কি করে ? আপনি তাে এক্সপায়ারি পিএম। মেয়াদ ফুরিয়ে গেছে। আপনি নামেই আছেন। কামে নেই। বিপর্যয় মােকাবিলায় কাজ করতে সরকার পারে। আপনি পারেন না।

প্রধানমন্ত্রীকে সংবিধান পড়ার কথা বলে মমতা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার আর রাজ্য সরকার দুইহ জনগণের দ্বারা নির্বাচিত। মুখ্যসচিব, ডিএম, আইএস, আইপিএসরা মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে, প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নয়। মনে রাখবেন এটা ফেডারেল স্টেট। মুখ্যমন্ত্রাকে বাদ দিয়ে মিটিং করবেন, ছবি তুলবেন আর নাটক দেখাবেন। আর বলবেন এত টাকা দিচ্ছি।

মমতার প্রশ্ন, টাকা কোথা থেকে? আপনি তাে হেরে যাবেন। ওই টাকা পাওয়া যাবে না। দিদির কুৎসা করবেন না। দিদি বােঝে কিভাবে দুর্যোগে পাশে থাকতে হয় এর আগে বন্যায় ও মাওবাদী সমস্যা মােকাবিলায় রাজ্য সরকার সব কিছুই যে করেছে তা মনে করিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন যখন লালগড়, নেতাই বিনপুরের মানুষ কাঁদছিল তখন কোথায় ছিলেন? যখন জামবনি, গােপীবল্লভপুর বন্যায় ভাসছিল তখন কোথায় ছিলেন? একবারও খোঁজ নিয়েছিলেন? ১২ বছরে ১ বার এসেছেন। ২০ বছরের সমস্যা আমরা ৭ বছরে মিটিয়ে দিয়েছি।

এদিন খর তাপ উপেক্ষা করেও গােপীবল্লভপুরের সভায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি, বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার সুকুমার হাঁসদা, বিধায়ক চূড়ামণি মাহাত, দুলাল মুর্মু প্রমুখ।