সরকারি জমি দখল করে সেখানে পাকা নির্মাণ, আর জলাশয় ভরাটের অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়াল চুঁচুড়ায়। হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রতাপপুর এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিজে চোখে সেই অবস্থা দেখে হতবাক স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদার। অভিযোগ, একটি সরকারি জমি দখল করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে এবং পাশে থাকা পুকুরে ময়লা ফেলে সমান করে দেওয়া হয়েছে।
বিধায়ক বলেন, ‘এই কাজ সম্পূর্ণ বেআইনি। সরকারি জমিতে এইভাবে দখলদারি বরদাস্ত করা যায় না। আমি জেলাশাসক, বিএলআরও, অতিরিক্ত জেলাশাসক ভূমি দপ্তর এবং চুঁচুড়া থানার আইসির কাছে লিখিত অভিযোগ জানাবো।’ তিনি আরও বলেন, ‘যদি এই ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি বিষয়টি জেনেও প্রশাসনকে না জানান, তাহলে দলীয় নেতৃত্বকে জানাবো। দল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
Advertisement
পরিদর্শনের সময় বিধায়ক স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আইন মেনে ব্যবস্থা না নিলে বিষয়টি তিনি নিজে তদারকি করবেন। তাঁর কথায়, ‘এইভাবে পুকুর ভরাট মানে পরিবেশ ধ্বংসের সমান। সরকার এমন কাজ একেবারেই সমর্থন করে না।’ অন্যদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তি অচ্যুৎ সাধু জানিয়েছেন, ‘আমি সরকারের কাছ থেকে ওই জমি লিজ নেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলাম। পুরসভাকেও জানিয়েছিলাম। কিন্তু অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ করা যে বেআইনি, সেটা আমি জানতাম না। এটা আমার ভুল।’ তিনি জানান, প্রায় দু’মাস ধরে এই কাজ চলছিল।
Advertisement
তবে প্রশ্ন উঠছে, দিনের পর দিন সরকারি জমি দখল হয়ে গেল অথচ স্থানীয় কাউন্সিলর বা পুরসভার কোনও আধিকারিকের নজরে এল না কেন? প্রশাসনও বিষয়টি জানল না কীভাবে? বিজেপি রাজ্য কমিটির সদস্য স্বপন পাল বলেন, ‘এটাই এই সরকারের চিত্র। বিধায়ক নিজে গিয়ে দখলদারি দেখতে পেলেন, অথচ তাঁর দলের কাউন্সিলর জানেন না কিছুই। প্রশাসনের কোনও ভূমিকা নেই। আইন-কানুন বলে কিছুই নেই এখন।’
বিধায়ক অসিত মজুমদার পাল্টা জানান, ‘মানুষকেও সচেতন হতে হবে। বেআইনি কিছু দেখলে সরাসরি অভিযোগ করতে হবে। প্রশাসন বা আমিও পাশে থাকব, কিন্তু নীরব দর্শক হয়ে থাকলে এই ধরনের দখলদারি চলতেই থাকবে।’
চুঁচুড়ার প্রতাপপুর এলাকায় এই ঘটনার পর থেকেই এলাকা জুড়ে আলোচনার ঝড়। স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে ওই জায়গা ফাঁকা পড়ে ছিল। কেউ পুকুর ভরাট করছে বলেও কিছু লোক জানত, কিন্তু সরকারি জমি বলে ধারণা ছিল না কারও। এখন প্রশ্ন, প্রশাসন এই ঘটনায় কতটা দ্রুত পদক্ষেপ নেয়, সেটাই দেখার।
Advertisement



