কমছে না পরিযায়ী-যন্ত্রণা, কেরলে আত্মঘাতী বাংলার শ্রমিক

প্রতিকি ছবি (Photo: iStock)

বাড়ি ফিরতে না পেরে মানসিক অবসাদে কেরালায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী এ রাজ্যের এক পরিযায়ী শ্রমিক । মৃতের নাম আশিক ইকবাল মন্ডল (২২)। মৃত যুবকের বাড়ি ডােমকল থানার জিৎপুর শিরােপাড়া গ্রামে। ঘটনায় শােকের ছায়া পরিবারে।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে পাঁচ মাস আগে কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছিলেন আশিক। লকডাউনের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মজুরির টাকা প্রায় শেষ হয়ে আসছিল। খাবার কিনে খাওয়ার টাকাও ছিল না।

গত বুধবার কেরালা থেকে একটি ট্রেন পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে মুর্শিদাবাদে এসেছিল। ওই ট্রেনে বাড়ি আসতে পারেননি আশিক ইকবাল। ফিরতে না পেরে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। কেরলের যেখানে আশিক থাকতেন, সেখানে তাঁর গ্রামেরই আরও ৩০ জনের বাস। তাঁরা অভিযােগ করে বলেন, প্রথম ট্রেনে আসার জন্য অনেকবার চেষ্টা করেছিলাম আমরা। পুলিশ প্রথমবার আমাদের সুযােগ দেয়নি দ্বতীয়বার নিয়ে যাবে বলেছিল। এরপর থেকেই ভেঙে পড়ে আশিক।


তাঁরা জানিয়েছে, যে ঠিকাদারের কাছে আশিক কাজ করতেন, তিনি টাকা দেননি। ফলে সঙ্গে থাকা টাকা প্রায় শেষই হয়েছিল তাঁর। যে ঘরে সকলে থাকতেন, সেই ঘর থেকে কিছুটা দূরে একটি আম বাগানের মধ্যে শনিবার সকালে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন আশিক। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘােষণা করেন। এরপরই পরিবারের লােকেদের কাছে খবর পাঠানাে হয়।

আশিকের বাবা জাবেদ মন্ডল বলেন, বাড়ির ছােট ছেলে। এখানে কাজ না পেয়ে প্রথমবারের জন্য কেরলে গিয়েছিল কাজেই। ট্রেনে‌ না আসতে পেরে ভেঙে পড়েছিল। ছেলে আমার আত্মহত্যা করার মতাে নয়। ফোনে অনেক বুঝিয়েছিলাম। মৃতের দাদা আব্দুল হালিম বলেন, ‘মৃতদেহ আনতে পারছি না। শেষ দেখাটা হয়তাে হবে না। গ্রামের অনেক ছেলেই এখনও ওখানে রয়েছে। তাঁদের বাড়িতে আনার ব্যবস্থা করুক সরকার। না হলে ভাইয়ের মতাে অনেকেই আত্মহত্যা করবে।’

জেলা পরিষদের সভাধিপতি মােশারফ হােসেন বলেন, ‘এখানকার অনেক যুবকই এখনও আটকে রয়েছে কেরলে। তার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে গেল। মৃতদেহ আনার চেষ্টা করছি আমরা। ওই পরিবারের পাশে সব সময় থাকব’।